চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার পিংড়া মাস্টার বাজার এলাকায় হারুন মুন্সি নামের এক সুদ ব্যবসায়ির প্রতারনার শিকার হয়েছেন কয়েক শতাধিক খেটে খাওয়া দিনমজুর। হারুন মুন্সির প্রতারনায় থেকে মুক্তি পেতে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। বুধবার বিকেরে মতলব দক্ষিণ উপজেলার পিংড়া মাস্টার বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়।
মতলব ডিগ্রি কলেজ গেইট এলাকার হারুন মুন্সি (৪৫) কোনো ব্যবসা না করেই কোটি কোটি টাকা সুদে সাধারণ মানুষদের দিয়ে অধিক মুনাফা লুটে নিচ্ছে। লভ্যাংশসহ টাকা পরিশোধের পরও গ্রাহকদের কাছ থেকে জিম্মায় রাখা অলিখিত স্ট্যাম্প, ভোটার আইডি কার্ডের কার্বন কপি এখনো ফেরত দিচ্ছে না।
ভুক্তভোগি পিংরা মাস্টার বাজার এলাকার মৃতঃ চান মিয়ার ছেলে সাহাবুদ্দীন (২৮) জানান, দুই বছর আগে হারুন মুন্সির কাছ থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা আনি। দু বছরে সুদের লাভের ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করি। হারুন মুন্সি আমার কাছ থেকে থেকে স্ট্যাম্প, চেক পাতা, আইডি কার্ডের কার্বন কপি জমা রাখেন। সুদ আনা মুল টাকা করোনার জন্য পরিশোধ করতে না পারায় সুদ ব্যবসায়ী হারুন মুন্সি নিজে ও তার লোকজন দিয়ে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে
বলে জানায়।
অপর ভুক্তভোগি হাসান জানায়, লকডাউনের সময় হারুন মুন্সির কাছ থেকে সে ৫০ হাজার টাকা সুদ নেন। ৬ মাসের মধ্যে আমি আমার সমিল বিক্রি করে সুদ সহ সকল টাকা পরিশোধ করে ১ হাজার টাকা কম দেই। টাকা কম দেওয়ায় হাসানের কাছ থেকে স্ট্যাম্প, চেক পাতা, আইডি কার্ডের কার্বন কপি তিনি জমা রাখেন। সেই কাগজ তিনি হাসান কে ফেরত দেন না।
রবিউল ইসলাম জানায়, সুদে হ্রুন মুন্সির কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেই। এ টাকার তাকে নানা ভাবে হয়রানি করেন। সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এখন দেশে আসলেও তাকে নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।
বহরির স্কুল শিক্ষক আমজাদ বলেন, আমি হারুন মুন্সির কাছ থেকে কিছু টাকা সুদে আনি। সে টাকা পুরোপুরি পরিশোধ করতে কিছু সময় লাগে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমাকে হারুন মুন্সি নিজে উপস্হিত থেকে লোকজন নিয়ে তুলে নিয়ে যাবার সময় স্থানীয় জনতা দেখতে পেয়ে আমাকে উদ্ধার করে ।
সানু বেগম নামের অসহায় এক নারী জানান, তার পরিবার হারুন মুন্সির কাছ থেকে সুদে টাকা আনেন। সুদসহ সব টাকা পরিশোধ করলেও খালি স্ট্যাম্প, খালি ব্যাংকের চেক, ভোটার আইডি কার্ডের কার্বন কপি এখন পর্যন্ত সে ফেরত দেয় না। হারুন মুন্সি কাছে বহুবার এ সব কাগজ ফেরত চাইলে দেই দিচ্ছি করে হয়রানি করছে।
দিনেশ সরকার একজন জানান, ৩০হাজার টাকা সুদে আনা হয়। ৭০ হাজারের বেশি টাকাপরিশোধ করােন। তারপর ও কাগজ স্ট্যাম্প, পত্র ফেরত দিচ্ছে না। রিপন সরকার, ৪০ হাজার টাকা আনা হয়। দিয়েছে ৮০ হাজার টাকা। স্ট্যাম্প ফেরত দেয়না। আবু ইসুব কাজী। ৯৯ হাজার টাকা আনা হয়। দেয়া হয়েছে প্রায় দেড় লাখ। স্ট্যাম্প ও আইডিকাডের ফটোকপি রাখা হয়। তা ফেরত দেয়না। জামাল মৃধা। ৫০ হাজার টাকা আনা হয়। দেয়া হয় ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। সানু বেগমসহ আরো ২০ থেকে২৫ জনের সাথে একই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে সুদ ব্যবসায়ি হারুন মুন্সি।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগি ফারুক হোসেন, জুয়েল কবিরাজ, আমজাদ মাস্টার, মোস্তফা মৃধা, ইউসুব কাজী, আবু সাঈদ, মুক্তা বেগমসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদক: শরীফুল ইসলাম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur