স্বাস্থ্য নাগরিকদের মৌলিক অধিকার গুলোর মধ্যে একটি। চাঁদপুরর ৮ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ইউএসসি ২০টি,এইচ এন্ড এফডব্লিউসি,১টি বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ২৩০টি কমিউনিটি ক্লনিক রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১৯৯জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কর্মরত আছেন ১৪৯ জন।
এতে ৫০ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। শূন্য পদগুলোর মধ্যে রয়েছে- মেডিক্যাল অফিসার ,সহকারী সার্জন,জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী ও গাইনী,মেডিসিন,চক্ষু, শিশু,অর্থেো সার্জারী ,ইুএনটি ও চর্ম,যৌন ইত্যাদি ।
স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত
স্বাস্থ্য নাগরিকদের মৌলিক অধিকার গুলোর মধ্যে একটি। চাঁদপুরর ৮ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ইউএসসি ২০টি,এইচ এন্ড এফডব্লিউসি,১টি বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ২৩০টি কমিউনিটি ক্লনিক রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১৯৯জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। কর্মরত আছেন ১৪৯ জন। রি ২০২২ মাসের গ্রতিবেদনের এক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ জেলা একটি নদীবিধৌত,নদীভাঙ্গনগ্রস্থ হওয়ায় অধিকাংশ সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার মান নিম্মগামী।চাঁদপুরের ২০টি ইউনিয়ন নদীভাঙ্গনের শিকার । কোনো কোনো ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই নদীভাঙ্গনের ফলে সম্পূর্ণ বিলীন আবার কোনো কোনো ইউনিয়ন আংশিকভাবে কিংবা পুন:সিকস্তি হয়েছে ও নতুন নতুন বাড়িঘর তুলে পুনরায় বসতি শুরু করেছ এমন ইউনিয়নগুলি হলো– হাইমচরের হাইমচর,নীলকমল, চরভৈরবী ও উত্তর আলগী, চাঁদপুরের ইব্রাহিমপুর,বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের পশ্চিমতীর ফতেজংগপুর,রাজরাজেস্বর,তরপুরচন্ডী,ল্যান্দী,মতলব ইউনিয়নের ফরায়েজীকান্দি,মোহনপুর, কলাদি
জহিরাবাদ,এখলাছপুর ইত্যাদি ইউনিয়নগুলোতে প্রায় ৩ লক্ষাধিক চরাঞ্চলবাসী বসবাস করছে । এ অধিবাসীদেরই স্বাস্থ্যসেবা প্রকট ।
ফলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা থেকে তারা বঞ্চিত । চরাঞ্চলগুলোতে ঔষধ বিক্রির দোকান থাকলেও এসব দোকানগুলোতে নিম্মমানের ঔষধে সায়লাব। টাকা দিয়ে ঔষধ কিনলেও কোনো কাজ হচ্ছে না ।
জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের এক তথ্যে জানা যায়, ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চাঁদপুর জেলার ৮ উপজেলা লোক সংখ্যা ২৫ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৭ জন। এর মধ্যে পুরষ সংখ্যা ১১ লাখ ৯২ হাজার ৩শ’৩১ জন এবং মহিলা
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য মতে,২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ব্যতীত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ১শ’৯৯ জন চিকিৎসকের পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৪৯ জন আর ৫০ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য।
সে মতে প্রতি ১৬ হাজার ৮শ’৭১ জনের জন্যে ১ জন চিকিৎসক ও ৭ হাজার ৭শ’ ৫৮ জনের জন্য ১টি করে বেড রয়েছে। এদিকে প্রতিটি কমপ্লেক্সে ১টি করে বেড সরকারি নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে ।
জেলার চরাঞ্চলগুলোর স্বাস্থ্যসেবার মান আরো নাজুক পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে। হাইমচরের মধ্যচর,হাইমচর,ঈশানবালা, চরফতেজংগপুর,চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর,বাঁশগাড়ি,লগ্মীমারা,জাহাজমারা ও মতলবের ষষ্ঠখন্ডবোরোচর,বোরোচর,চর ইলিয়ট, চরকাশিম প্রভৃতি চরাঞ্চল গুলিতে সরকারিভাবে স্বাস্থ্যসেবা নেই বললেই চলে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে তাদের জীবন ধারণ করতে হচ্ছে।
ওই সব চরাঞ্চলগুলিতে যে কোনো বয়সীর ডায়রিয়া,জ্বর, আমেশয়,ইনফ্লুয়েঞ্জা ও গর্ভকালীন সময়ে ও প্রসূতি মায়েদেরকে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় নিয়ে আসতে হয়। ঔ সব রোগীরা আবার কোনো কোনো কারণে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বেসরকারি হাসপাতালের স্মরণাপন্ন হয়। ফলে বিভিন্ন চিকিৎসার পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে প্রচুর টাকা ব্যয় করার পর তাদের ঔষধ কেনার আর টাকা থাকে না । আবার কেউ কেউ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রের ফি অনেক বেশি বলে তারা হাতুরে ডাক্তারের সেবা নিয়েই বাড়ি চলে যায় ।
প্রাপ্ত তথ্য অনুয়ায়ী, চাঁদপুর সদরের লোক সংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৯ শ’১৯ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৫ শ ’৬ জন। বর্তমানে ১৫ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৯ হাজার ৪শ ৭০ জনের জন্য ১ জন চিকিৎসক এবং ৯ হাজার ৩শ’১৮ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে । শূন্যপদ ৮ টি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার লোক সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার ৫০ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৬ শ ’২৪ জন। বর্তমানে ১৪ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৫ হাজার ৩ জনের জন্য ১ জন চিকিৎসক এবং ৬ হাজার ৭শ’ ৭৫ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে ।শূন্যপদ ১০ টি।
মতলব উত্তরের লোক সংখ্যা ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৭ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১হাজার ১ শ ’১২ জন। বর্তমানে ১৯ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৩ হাজার ৯ শ’৭ জনের জন্য ১ জন চিকিৎসক এবং ৯ হাজার ৪ শ’১২ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে। শূন্যপদ ৯ টি।
হাজীগঞ্জ উপজেলার লোক সংখ্যা ৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৪শ’ ৭৭ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৭ শ ’৩৯ জন। বর্তমানে ১৪ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ২৩ হাজার ৬ শ’৫ জনের জন্য ১ জন চিকিৎসক এবং ৬ হাজার ৬শ’৯ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে ।শূন্যপদ ২ টি।
শাহরাস্তি উপজেলার লোক সংখ্যা ২ লাখ ২৯ হাজার ১শ’১৮ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৪ শ ’ ৭৯ জন। বর্তমানে ১৬ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৪ হাজার ৩ শ’ ১৯ জনের জন্য ১ জন চিকিৎসক এবং ৪ হাজার ৫ শ’৮২ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে। শূন্যপদ ২ টি।
ফরিদগঞ্জের লোক সংখ্যা ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬ শ’ ৮৩ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৭ শ ’৮ জন। বর্তমানে ২০ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৯ হাজার ৮শ ৩৪ জনের জন্য ১ জন চিকিৎসক এবং ১২ হাজার ৭শ’ ৯৬ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে। শূন্যপদ ৪ টি।
কচুয়া উপজেলার লোক সংখ্যা ৩ লাখ ৮২ হাজার ১ শ’৩৯ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৬ শ ’২০ জন। বর্তমানে ২৫ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৪ হাজার ১ শ’৫৩ জনের জন্য ১ জন্য চিকিৎসক এবং ১২ হাজার ৩ শ’২৭ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে। শূন্যপদ ৮ টি।
হাইমচরের লোক সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৫ শ’৭৫ জন। লোক সংখ্যার ঘনত্ব ৮শ ’১৬ জন। বর্তমানে ৯ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছে। সে মতে প্রতি ১৫ হাজার ৬ শ’ ৫৩ জনের ১ জন্য চিকিৎসক এবং ৩ হাজার ৫ শ’ ৩৪ জনের জন্যে একটি করে বেড রয়েছে। শূন্যপদ ২ টি।
এদিকে চাঁদপুরে ৪৭টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এ গুলোর মধ্যে ৬টি ২০ শয্যাবিশিষ্ট। বাকিগুলো ১০ শয্যাবিশিষ্ট। চিকিৎকরা অধিকাংশই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং তারাই বেসরকারি এসব হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে এক বা একাধিক হাসপাতালে সরকারি দায়িত্ব পালনের বাহিরে কর্তব্যপালন করছেন বলে জানা যায় ।
আবদুল গনি,
৩০ জানুয়ারি ২০২২
এজি