সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও অপপ্রচার বন্ধে ডিসিদের আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার ডিসি সম্মেলনের শেষ দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আয়োজিত ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের প্রথম অধিবেশনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি বলেন, দেশে সাড়ে আট থেকে নয় কোটির কাছাকাছি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রচারের একটি বড় ক্ষেত্র। এটি অপপ্রচার, গুজব রটানোরও বড় ক্ষেত্র। গত ৭-৮ বছরের পরিসংখ্যানে দেখে যায়- দেশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যে সব গুজব রটানো হয়েছে সেগুলোর প্রায় সবই এ মাধ্যমে করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিসিদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এ ব্যাপারে তারা যেন সব সময় তৎপর থাকেন এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেন। এ সময় তিনি ডিসিদের মাঠ প্রশাসনের প্রাণ হিসাবেও বর্ণনা করেন।
এদিকে একইদিন দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (এটকো) নেতারা বৈঠক করেন। তথ্য ও সম্প্র্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় এটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ভিডিও সংবাদ প্রচারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়ার বিধান, আইপিটিভিতে সংবাদ প্রচার এবং ইউটিউবের মাধ্যমে পত্রিকার সংবাদ প্রচার বন্ধ করার দাবি জানান।
এটকোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো আইপিটিভি সংবাদ প্রচার করতে পারে না। ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংবাদ প্রচার করা সম্প্রচার নীতিমালার পরিপন্থি। এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে সব সংবাদপত্র ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সংবাদ প্রচার করছে তারও কোনো অনুমতি নেই। অনুমোদনহীন কিছু করা বেআইনি। এ ব্যাপারেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শর্ত ছিল- প্রিন্ট আকারে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়, সেটাই শুধু অনলাইনে যাবে। সেখানে ইউটিউব চ্যানেলজুড়ে দিয়ে সংবাদ প্রচার কিংবা টকশো করার কথা নয়। এগুলোর যেহেতু অনুমোদন নেই- তাই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈঠকে এটকো পরিচালকদের মধ্যে এটিএন চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান, বাংলাভিশনের আব্দুল হক, দীপ্ত টিভির কাজী জাহিদুল হাসান, সময় টিভির আহমেদ যোবায়ের, ডিবিসি নিউজের এম মঞ্জুরুল ইসলাম, নাগরিক টিভির নাভিদুল হক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজান-উল-আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।