আগুন লাগার পর শঙ্কামুক্ত হয়ে যাত্রী নিয়ে এমভি সুরভী-৯ নামের লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়েছে। শনিবার (০৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোহনপুর মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চটি আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
তবে আগুন লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন লঞ্চের কর্মীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ এর চাঁদপুরের বন্দর কর্মকর্তা মো. কায়সারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের ধোয়া বের হতে দেখেন যাত্রীরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে কোন একজন যাত্রী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চান। এরপর পরই পুলিশ মোহনপুর এলাকায় আসলে সুরভী-৯ লঞ্চটি ঘাটে আটকে রাখা হয়।
বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা আরও বলেন, লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন ধরার পর কিছু সময়ের মধ্যে তা নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয় স্টাফরা। ফলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে লঞ্চটি। সারারাত লঞ্চটি মোহনপুর এলাকায় নোঙর করে রাখা হয়। শঙ্কাুমুক্ত নিশ্চিত হয়ে রোববার ভোর সাড়ে ৫ টায় মোহনপুর থেকে লঞ্চটি বরিশাল উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
জানা যায়, এমভি সুরভী-৯ নামের লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। রাত ১২টার দিকে মোহনপুর এলাকা অতিক্রমকালে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন ধরে যায়। এ সময় লঞ্চে থাকা শত শত যাত্রীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। লঞ্চের স্টাফদের প্রচেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
লঞ্চের যাত্রী বাকেরগঞ্জের পাদ্রিশিবপুরের গৃহিণী উম্মে হাবিবা বলেন, তিনি লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় থাকা অবস্থায় হঠাৎ দেখতে পান কাপড় দিয়ে প্যাঁচানো পাইপ (সাইলেন্সার অ্যাডজাস্ট) দিয়ে ধোঁয়া উঠছে। কয়েকজন স্টাফ বালতিতে পানি এনে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। রাত সাড়ে ১০টায় ধোঁয়া ফের দেখা দিলে তিনি ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে সহায়তা চান।
হাবিবা বলেন, লঞ্চে যাত্রী খুবই কম ছিল। সবাই লঞ্চটি পাড়ে নেওয়ার অনুরোধ করলেও কর্তৃপক্ষ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিন বন্ধ করে এক ইঞ্জিনে লঞ্চটির চলাচল অব্যাহত রাখে। এরপরও যাত্রীদের মধ্যে হইচই শুরু হয়। পরে রাত ১২টার দিকে কোস্টগার্ড লঞ্চে উঠে সাড়ে ১২টার দিকে মোহনপুরে ঘাটে লঞ্চটিকে নোঙর করে।
সুরভী-৯ লঞ্চের সুপারভাইজার আব্দুর রব বলেন, লঞ্চের সাইলেন্সার ঠান্ডা রাখার জন্য কাপড় পেঁচিয়ে রাখা হয়, সেটি ভেজা ছিল। সেখান থেকে ধোঁয়া বের হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তাঁরা বিভিন্ন সংস্থায় ফোন দিলে মোহনপুর থেকে কোস্টগার্ড এসে লঞ্চে অবস্থান নেয়। তাঁরা লঞ্চে অবস্থা খতিয়ে দেখেন। পরে লঞ্চের চেয়ারম্যান চাঁদপুরে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে বলেন।
ফায়ার সার্ভিসের বরিশালের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফায়ার ম্যান মো. জামাল হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে যাত্রীরা সহায়তা চেয়েছেন। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।
প্রতিবেদকঃ শরীফুল ইসলাম,৯ জানুয়ারি ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur