চিকিৎসাসেবা সাধারণ মানুষের দৌড়গড়ায় পৌছে দেওয়ার জন্য সরকার চালু করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসকের নিজের ইচ্ছেমত পরিচালিত হচ্ছে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদী কমিউনিটি ক্লিনিক (হাসপাতাল)। এতে করে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের পশ্চিম সকদী কমিউনিটি ক্লিনিক (হাসপাতাল) এর ভূমিদান করেন কমান্ডার আলহাজ্ব মোঃ হারুন চৌধুরী। তিনি অত্র এলাকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এই ভূমিটি দান করেন। তবে ভূমিটি সংস্কার করেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ। ২০০১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক আবু মোঃ মনিরুজ্জামান খান কমিউনিটি ক্লিনিকটির উদ্বোধন করেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন নারী তারা নিজের ও শিশুদের সমস্যা নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে এসে কয়েকঘন্টা বসে রয়েছেন। কেউ কেউ অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে চলে গেছেন বলেও অনেক রোগীরা জানান। তবে ডাঃ ফিরোজ ক্লিনিকের পাশের বাড়ির একজন মহিলার কাছে চাবি রাখেন। সেই মহিলা প্রতিদিনের মতো সকালে কমিউনিটি ক্লিনিকটি খুলতে ভুল করেন না। তিনি সরকারি ছুটি ও বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিনই কমিউনিটি ক্লিনিকটি খুলে থাকেন।
এছাড়া ক্লিনিকে কর্মরত আইরিন কেও দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। ক্লিনিকের ভেতরে কয়েকজন রোগী চিকিৎসকের অপেক্ষায় বসে থাকলেও চিকিৎসকের কক্ষে তালা ঝুলতে দেখা যায়। নিজের ইচ্ছামত তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকে আসেন, আবার নিজের ইচ্ছামত চলে যান। প্রায় সময় তিনি ক্লিনিকে আসেন না। রোগীরা ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে থেকে ফোন করলে উপজেলা বা অন্য কোথায় মিটিং আছে বলে ফোন কেটে দেন বলে জানান ভুক্তভোগী রোগীরা।
লিপি আক্তার জানান, আমি গর্ভবর্তী। সকাল ৯টা থেকে ক্লিনিকে ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে আছি।
জান্নাত বেগম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার ছেলের ঠান্ডাজনিত সমস্যা। রান্না-বান্না রাইখা সকাল থেকে বইসা আছি।
পারুল বেগম চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, আমি চর্মের সমস্যা নিয়া কয়দিন ধরে ভুগতাছি। তবে ডাক্তারের জন্য বইসা আছি।
কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা কয়েকজন রোগী জানান, আমরা দূর থেকে পায়ে হেটে ক্লিনিকে এসেছি, তবে এসে দেখি ক্লিনিক খোলা ডাক্তার নেই। আরও দুইদিন আসছি তখনও ডাক্তার পাই নাই। সরকার গরিবের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ক্লিনিক করছে। তবে ডাক্তার ঠিকমত ক্লিনিকে আসে না। যেদিন আসে সেদিন তার ইচ্ছামত অফিসে মিটিং আছে বলে চলে যায়। ঠিক মতো ঔষধ চাইলে দেন না।
মফিজ বেপারী, আলাউদ্দিন খানসহ প্রায় ৩০জন নারী, পুরুষ ও শিশু চিকিৎসকের অপেক্ষা করে বসে থাকলেও কেউ কেউ আবার চিকিৎসাসেবা না পেয়ে বাড়িতে ফিরে চলে যান।
কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত ফিরোজ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমি সকাল ৯টায় ক্লিনিকে আসছি। তবে মাঝখানে একটু চা খেতে বাহিরে গিয়েছিলাম।
চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা পলিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, তাদেরকে সবসময় তদারকি করা হয়। যেহেতু আমরা অভিযোগ পেয়েছি, সেহেতু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur