১৮ বছর বা বেশি বয়সের সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া সম্পন্ন হলে এবং সংক্রমণ আরও নিচে নেমে আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি।
রবিবার ১৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শোক দিসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন,‘সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে সংক্রমণ কমে যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন—সংক্রমণ শতকরা ৫ ভাগ বা তার নিচে আসলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। সেটি অবশ্যই মাথায় রেখেছি। এসকইসঙ্গে টিকা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা যদি আমরা ১৮ বছরের বেশি শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারি, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেশিরভাগই টিকা দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ আবাসিক শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে। কাজেই আমরা বাকি শিক্ষার্থীদের যদি টিকার আওতায় আসতে পারি, সেক্ষেত্রে নিয়ে আসতে পারবো (শিক্ষার্থীদের)। একেবারে শতকরা ৫ শতাংশ না হোক, সংক্রমণ যথেষ্ট পরিমাণ নেমে যাওয়া এবং টিকার ওপর নির্ভর করছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন,‘আমরা বার বার বলছি— আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিচ্ছি। আমাদের সকল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সার্বিক প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে করোনা অতিমারি অবস্থা কখন কী রকম দাঁড়ায় (তার ওপর)।
আমাদের গত বছরের অভিজ্ঞতা বলে যে—গত নভেম্বর ডিসেম্বর সংক্রমণ কমে গিয়েছিল। যদি এ বছরও একই রকম অবস্থা হয় তাহলে আমরা সেই সময়ের দিকে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষাগুলো নিতে পারবো। সে রকমভাবে পরীক্ষার সময়সূচিসহ সবকিছু ঠিক করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ। সব কিছু নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।’
সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে নাকি পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,‘করোনা পরিস্থিতি কী অবস্থায় যায়,তার ওপর অনেক খানি নির্ভর করবে। যদি একেবারেই সংক্রমণ কমে যায় সে ক্ষেত্রে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যেতে পারে। আর যদি ধীরে ধীরে কমে,সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় আগে খুলে দেয়া হতে পারে,কারণ টিকা দেওয়া হয়ে যাচ্ছে। পুরোটা নির্ভর করবে সংক্রমণের গতি প্রকৃতির ওপর।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বিশেষ করে মাধ্যমিক যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেটা যখনই খুলবো আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে সেখানেও সে সব একবারে খুলে দেওয়া হবে সে রকম হয়ত নয়, আমরা ধাপে ধাপে শুরু করবো। মাথায় রাখতে হবে আমার শিক্ষার্থী পৃথিবীর যেকোনও দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
সংক্রমণের হার কমলেও ভাইরাসের যে ধরন, তাতে দীর্ঘদিন আমাদের টিকা নেয়া, মাস্ক পরিধান করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা আরও দীর্ঘ দিন মেনে চলতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে সেগুলো বিবেচনায় রেখে আমরা আমাদের পরিকল্পনা করে রেখেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী অনেক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থী প্রায় ২৮ লাখ। এছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৪০ লাখ। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত কম শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছি। শুধু আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছি।
টিকা দিতে যত সময় লাগতে পারে। এ কারণে আমরা বলতে পারছি না কবে নাগাদ খুলে দিতে পারবো। তবে মানুষের টিকা নিতে যে ব্যপক আগ্রহ,তাতে দ্রুত টিকার আওতায় আনতে পারবো।’
মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের টিকার প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,‘বিশ্বের অন্যান্য দেশে ১২ বছরের নিচের শিশুদের টিকার ব্যবস্থার কথা বলছেন। আমরা সেই অপেক্ষা হয়ত করতে পারবো কিনা জানি না। মাধ্যমিক খোলার অবস্থা হলে ধাপে ধাপে খুলে দেয়ার যে ব্যবস্থা রেখেছি সে ভাবেই হয়তো খুলে দেবো। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের যেহেতু টিকা নেয়ার সুযোগ রয়েছে কাজেই টিকা সম্পন্ন করা করা হবে। আবাসিক শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও শিক্ষার্থীকে যদি টিকার আওতায় আসা যায় এবং সংক্রমণ যদি কমে যায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় হয়ত আগেই খুলে দেয়া যাবে।
বার্তা কক্ষ , ১৬ আগস্ট ২০২১
এজি