এম এ আকিব | আপডেট: ০১:০৪ অপরাহ্ণ, ০৫ আগস্ট ২০১৫, বৃহস্পতিবার
চাঁদপুর জেলা শিক্ষা অফিসটি কৃত্রিম (পানি আটকা পড়ায়) বন্যাকবলিত হয়ে পড়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জমে যায় হাঁটু পরিমাণ পানি। বর্তমানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কার্যক্রম চালনায় অনেকটা বাধ্য হয়েই অফিসে আসছেন কর্মকর্তারা।
অফিসের চতুর্দিকে পানি আটকা পড়ে টয়লেটের ময়লা পানি ও পৌরসভার সাপ্লাই পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে পড়েছে। ফলে ট্যাঙ্কির পানি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় অফিসে থাকাকালীন সময়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েও টয়লেটে ব্যবহার করতে হচ্ছে ময়লা আবর্জনাযুক্ত পানি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যানঘাট এলাকায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পশ্চিমে ও ডায়াবেটিক হাসপাতাল সংলগ্ন জেলা শিক্ষা অফিসের আশপাশের সবগুলো ডোবা (নিচু জমি) ভরাট হয়ে গেছে। ফলে অফিসটির বাউন্ডারী দেয়ালের বাইরে ও ভেতরের জায়গাটি নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই কোমর পরিমাণ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অফিসে যাতায়াতের পথেও থাকে হাঁটু পানি।
চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই ব্যাপক বর্ষণের ফলে অফিসের বাউন্ডারি দেয়ালের ভেতরে স্থায়ী এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অফিসের পূর্বপাশে টয়লেটের ট্যাঙ্কির পানির সাথে একাকার হয়ে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা প্রতিনিয়তই দুর্গন্ধ চড়াচ্ছে। এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অনেকটা বাধ্য হয়েই অফিস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
এটি লাঘবের জন্যে শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি বিভাগে বরাদ্ধ চেয়ে আবেদন করেও প্রতিকার পেতে দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর গুণতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। ‘কার ফোঁড়া কে গালবে?’ এমনটিই ফুটে উঠে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আক্তার হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এ নোংরা পানি থেকে বাঁচতে চাই। এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর ময়লা আবর্জনাযুক্ত নোংরা পানির দুর্গন্ধময় পরিবেশে আমরা অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে মাটি দ্বারা নিচু স্থান ভরাট করা প্রয়োজন।’
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ কাজের জন্য বরাদ্ধ চেয়ে গত ৮ জুলাই (স্বারক নং-১৪০৭) শিক্ষা অধিদপ্তরে এবং প্রাক্কলন (সম্ভাব্য খরচের হিসাব) তৈরির জন্যে এলজিইডিতে (২৮ জুলাই, স্মারক নং-১৪৮৪) একটি আবেদন করা হয়েছে।
এ ছাড়াও চাঁদপুর পৌরসভায়ও ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট (স্বারক নং-১৫৭) একটি, ১ জুলাই ২০১৫ (স্মারক নং-১৩৬৭) তে একটি, মোট দু’টি আবেদন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব আবেদনের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া ‘চাঁদপুর টাইমস’কে জানান, ‘এ ধরনের আবেদনের বিষয়টি আমার নলেজে নেই, আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী শামছুদ্দোহা সাহেব হয়তো বলতে পারবেন।’
পরে চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শামছুদ্দোহার কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি তিনিও জানেন না উল্লেখ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘হয়তোবা মেয়র মহদয়ের কাছে আবেদন করতে পারে।’
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ এ কাজটি পৌরসভার নয় উল্লেখ করে বলেন, চাঁদপুরে পানি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তা ছাড়া শিক্ষা অফিসের কাজ সংশ্লিষ্ট বিভাগের। এটি আমাদের কাজ নয়।
এ দিকে কাজটি যে বিভাগের বা যারই হোক না কেনো, এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর ময়লা আবর্জনাযুক্ত নোংরা পানির দুর্গন্ধময় পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে চায় চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা। তারা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী পদক্ষেপ কামনা করেন।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫