বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নাটক ‘ঘটনা সত্য’। এ নিয়ে ব্যাপক তোপের মুখে পড়েন প্রযোজক এস কে সাহেদ আলী, পরিচালক রুবেল হাসান, অভিনয়শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী।
বুধবার নাটকটিতে অভিনয় করা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন আফরান নিশো। তিনি বলেছেন, ‘আমি দুঃখিত, লজ্জিত, বিব্রত ও অনুতপ্ত’।
এক বিবৃতির তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের সামাজিক ইস্যুতে আরও সংবেধনশীল হবেন। প্রতিশ্রুতি দেন বিশেষ শিশুদের কল্যাণে কাজ করে যাবেন।
“পৃথিবীর প্রতিটি বাবার মতো, আমিও আমার সন্তানের প্রতি সমান আবেগী। ‘ঘটনা সত্য’ নাটক নিয়ে যে অনাকাঙ্খিত এবং অনিচ্ছাকৃত ভুল সংগঠিত হয়েছে— এতে যে সব বাবা-মায়ের হৃদয় কেঁদেছে, আমিও তাদের কান্না অনুভব করতে পেরেছি। তাই সবার দুঃখে আমিও সহমর্মী। প্রতিটি পরিবারের কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।
আমি যে মাধ্যমে কাজ করি, সেই মাধ্যমটির সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি মানুষকে আমি একটি পরিবারের সদস্য মনে করি। প্রযোজক, পরিচালক কিংবা শিল্পী-কলাকুশলী— আমরা সবাই এই পরিবারের সদস্য। আমি আমার নাট্যপরিবারের কাছেও দুঃখ প্রকাশ করছি। এ ভুলে তাদেরকেও কষ্ট দিয়েছি।
আসুন জেনে নেই ‘ঘটনা সত্য’ নাটক নিয়ে যা বললেন আফরান নিশো নিজের ফেসবুক পেজে
ঘটে যাওয়া ভুলের জন্য আমরা কেউই দায় এড়াতে পারি না। ভুল থেকে আমি,আমরা নতুন করে শিক্ষা নিয়েছি। একই সঙ্গে নিজের সামাজিক অবস্থান, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা নতুন করে উপলব্ধি করতে পারছি। আমি দুঃখিত, লজ্জিত, বিব্রত— এবং অনুতপ্ত। আশা করছি, ভবিষ্যতে সামাজিক যে কোনো বিষয়ে আমি, আমরা আরো অনেক বেশি সংবেদনশীল থাকবো।
বিশেষ শিশুদের প্রতি আমার বিশ্বাস, ভালোবাসা বরাবরই ছিল। এক ভুলে তা শেষ হয়ে যেতে দিবো না। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বিশেষ শিশুদের কল্যাণে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাবো। কারণ আজকের শিশুরা আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। আমাদের সম্পদ।
আমার নাট্যপরিবারের প্রতিটি সংগঠন বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন। তাদের উদ্দেশ্যে সশ্রদ্ধ কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা করছি, সবার সহযোগিতা নিয়ে আমি,আমরা সুন্দর এবং শুদ্ধ শিল্পচর্চার পথে এগিয়ে যাবো।”
‘ঘটনা সত্য’র গল্পে দেখা গেছে, বিলকিছ ও মুকুল পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটের গৃহপরিচারিকা ও গাড়ির ড্রাইভার। তারা সব সময় এটা সেটা চুরি করে, কাজে ফাঁকি দেয়, মিথ্যা বলে! এতে মালিক পক্ষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়। শুধু তা-ই নয়, কাজের মেয়ে বিলকিছ বাজার থেকে সস্তা ও পচা সবজি কিনে আনে, ফ্রিজে রাখা খাবার এঁটো করে রাখে, বাসায় রাখা অন্যের কসমেটিকস নিজে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে, অপচয় করে। অন্যদিকে মুকুলও মিথ্যা বলে, ডিউটি বাদ দিয়ে অন্যত্র যাত্রী বহন করে, লুকিয়ে গাড়ির তেল বিক্রি করে।
ঘটনাক্রমে বিলকিছ ও মুকুলের সম্পর্ক প্রণয়ে রূপ নেয়, গড়ায় বিয়েতে। জন্ম হয় একটি বাচ্চা। চিকিৎসক জানান, বাচ্চাটি স্বাভাবিক নয়- বিশেষ শিশু। বিলকিছ ও মুকুল ধরে নেয়, এটি তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত!
ঢাকা চীফ ব্যুরো, ২৯ জুলাই, ২০২১;
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur