কুমিল্লায় তিনটি হত্যা মামলাসহ ৩০ মামলার আসামি ও তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করেছে ১০ বিজিবি।
শুক্রবার গভীর রাতে কুমিল্লা সীমান্তের কেরানীনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে অস্ত্র-গুলি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
শনিবার বিকালে তাকে কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি। গ্রেফতারকৃত রেজাউল করিম জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের আঃ রাজ্জাকের ছেলে।
শনিবার বিকালে বিজিবি কার্যালয় থেকে দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার গভীর রাতে ১০ বিজিবি’র অধীনস্থ গোলাবাড়ী পোস্টের একটি বিশেষ টহলদল গোপন সংবাদের সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কেরানী নগর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। রাত ১টার দিকে ভারত হতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশরত এক ব্যক্তিকে দেখতে পায় বিজিবি টহলদল। তারা তাকে চ্যালেঞ্জ করলে সে ভারতের অভ্যন্তরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় ধাওয়া করে ১টি ব্যাগসহ রেজাউল করিমকে আটক করা হয়। পরে ব্যাগ তল্লাশী করে ১টি .৩২ বোর রিভলভার, ম্যাগাজিনসহ ৪টি গুলি, ১৬ পিস ইয়াবা, এক প্যাকেট নতুন ধরনের ভারতীয় ‘কৌটা মাদক’, ভারতীয় ৩টি পরিচয়পত্র, ভারতীয় ইউসিবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ২টি, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার ৭টি কার্ড, বাংলাদেশী নগদ টাকা ৭৮৫ টাকা এবং কাতারের ১০ দিরহাম উদ্ধার করা হয়।
১০ বিজিবি’র অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, গ্রেফতারকৃত রেজাউল কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী। সে ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করে বাংলাদেশে হত্যা, রাহাজানি এবং ধর্ষনের মতো নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক হত্যা মামলাসহ অন্যান্য প্রায় ৩০টি মামলা চলমান রয়েছে।
রেজাউল কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক দেলায়ার হোসনের ঘাতক। দেলায়ার খুনের পর থেকে সে বেশির ভাগ সময়ই ভারতে অবস্থান করতো।
ভারতীয় পাসপোর্টসহ দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াত। সে বিদেশ থাকলেও বিশেষ করে সীমান্তবর্তী চৌয়ারা ও আশপাশের এলাকায় অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রন করতো সে। দেলায়ার হত্যাকান্ড ছাড়াও ছাত্রলীগ কর্মী ‘রাসল’ ও ‘আপেল’ হত্যা কান্ডেরও মুল ঘাতক এবং রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সদর দক্ষিণ থানার এক প্রবাসীর স্ত্রীকে গণধর্ষণের মামলাও রয়েছে। যে কোন অপারধ সংঘটিত করেই ভারতে পালিয়ে যেত।
গ্রেফতারের পর রেজাউলের গ্রামের লোকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। নিহত দেলায়ারর স্ত্রী জিলকজর নেছা বলেন, রেজাউল ও তার সঙ্গীরা আমাকে বিধবা ও আমার দুই শিশু সন্তানকে এতিম করেছে। আমি রেজাউলের সর্বোচ্চ বিচার চাই।
কোতয়ালী মডেল থানা পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, রেজাউলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে আরো দুটি মামলা দায়েরে শেষে রোববার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।
প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ১৯ জুন ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur