বৃষ্টির এ চলমান অবস্থায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের প্রায় অধ্যশত রাস্তার বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এসব রাস্তা সঠিক সময়ে সংস্কার কাজ না করায় বর্ষার সময়ে অতি বৃষ্টির ফলে রাস্তা ভেঙ্গে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। বর্তমানে এসব আধা কাচা রাস্তার জনদূর্ভোগ চরমে, যেন দেখার কেউ নেই!
হাজীগঞ্জ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও একটি আধুনিক পৌরসভা নিয়ে গঠিত। পৌর এলাকার দক্ষিণ অঞ্চলের ১০,১১ ও ১২ নং ওয়ার্ডের কয়েকটি রাস্তা ইতিমধ্যে যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পুকুর পাড় কিংবা বিলের তীর দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তার পাশের সাইডগুলো ভেঙ্গে পড়তেছে। কিছু কাচা রাস্তায় ইট কংকেট না পেলায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এদিকে উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের মধ্যে বিশেষ করে ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের ৬নং বড়কূল পূর্ব, ৭নং বড়কূল পশ্চিম, ৯নং গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ও ১০ নং গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের কাচা পাকা অধিকাংশ রাস্তা অতি বৃষ্টির ফলে চক ধরে ভেঙ্গে পড়া শুরু হয়েছে। এ ভেঙ্গে পড়ার মূল কারন হচ্ছে রাস্তার দুই পাশে মাটি না থাকার কারন। অনেক রাস্তা বছরের পর বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় অস্তিত্ব নিয়ে টান দিয়েছে।
উপজেলার ৮নং হাটিলা ইউনিয়ন পরিষদের বেশীরভাগ রাস্তা গ্রামের বিলের তীর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর রাস্তার পাশ ভেঙ্গে পড়ছে। এই ইউনিয়নের মৎস্য খামারের মালিক জামাল ও মিজান গুরুত্বপূর্ন দুইটি রাস্তা ভেঙ্গে পেলার জন্য দায়ী করেন স্থানীয় হাটিলা গ্রামবাসী।
বেহাল এ রাস্তাগুলো দিয়ে চলাচলরত যাত্রীসাধারনের অভিযোগ, কবে নাগাদ কিভাবে কাজ হয়েছে অনেকে তা মনে করতে পারছে না। যেসকল ঠিকাদার কাজ করেছে বেশীভাগ কাজে অনিয়ম হয়েছে। যে কারনে পাকা রাস্তাগুলোর কার্ফেট উঠে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া গ্রামীণ রাস্তাগুলোতে ভারী যানবাহন চলাচল করায় ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে কাদায় পরিনত হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এদিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান কিংবা উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ রাস্তা সংস্কারে তেমন গুরুত্ব না দেওয়ায় গ্রামের সাধারণ মানুষের বিষন্নতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে এসব রাস্তা দিয়ে সিএনজি বা অটো রিক্সা চলাচল করতে চায় না। গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে এসব ভূক্তভোগী যাত্রীসাধারনের।
উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ফারুক, জামাল হোসেন,কাউচার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমাদের গ্রামে একটু বৃষ্টি হলে রাস্তার গর্তে পানি জমে কাধায় একাকার হয়ে যায়। তখন রিক্সা বা অটো চলাচল দূরের কথা মানুষ হাটতে খুব কষ্টকর হয়ে যায়।
৬নং বড়কূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন মিয়াজী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমার ইউনিয়নের বড়কূল ঘাট থেকে রায়চোঁ বাজার পর্যন্ত সড়কটির দুই পাশ ভেঙ্গে গেছে। ঠিকাদার ও পৌকশলী বিভাগকে বিষয়টি অবহিত করেছি। সরকারের বরাদ্ধ অনুযায়ী কাজ ঠিকমত হচ্ছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, গ্রামীণ রাস্তাগুলো কাজ করতে গিয়ে নানা জটিলতা দেখা দেয়। প্রতিবছরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে আমরা যে যে রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গেছে কিংবা সস্কার করা প্রয়োজন এসব রাস্তার পরিমাপ নিয়ে উপরস্থ কার্যালয়ে পুণসংস্কার এর জন্য আবেদন দিয়ে থাকি। আশাকরি চলমান বর্ষা শেষ হলে পুনরায় এসব রাস্তাগুলোর যে যে স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা সংস্কার করা হবে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন, ভারী যানবাহন যাতে গ্রামের রাস্তাগুলোতে না চলাচল করে তার নির্দশনা ইতিমধ্যে স্থানীয় চেয়ারম্যানদের অবহিত করেছি।
প্রতিবেদক:জহিরুল ইসলাম জয়, ৯ জুন ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur