চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক । আপডেট: ০১:২৩ অপরাহ্ণ, ২৬ জুলাই ২০১৫, রোববার
তিন বছর চাকরি করেছি। আমাকে স্থায়ী নিয়োগ দেয়ার কথা বলে সাত লাখ টাকা নিয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) পরিচালক প্রশাসন শাহজাহান কবির। আরো এক লাখ টাকা দিতে না পারায় ইন্টারনেটে রোল নাম্বার দিয়েও কিছুক্ষণ পর ডিলেট করা হয়েছে। আমার বয়স শেষ হয়ে যাওয়ায় আর চাকরির সম্ভাবনাও নেই। ফলে বিয়েও হচ্ছে না। এখন আমার বাঁচা মরা সমান।
এ অভিযোগ গাজীপুর শহরের শরিফা আক্তার পপি’র।
পপি জানান, তার পিতার নাম আইয়ুব আলী ওরফে শাহজাহান। তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে তার বোনের বাসায় থাকেন। তিন বছর ধরে তিনি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে একটি প্রজেক্টে চাকরি করতেন। চাকরিরত অবস্থায় ইনস্টিটিউটের (ব্রি) পরিচালক(প্রশাসন) শাহজাহান কবির পপিকে এসএ (ফিল্ডম্যান) পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে মোট সাত (৭ লাখ) লাখ টাকা নেন। অতঃপর লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে মৌখিক পরীক্ষা দেন পপি।
মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রথমে ওয়েবসাইটে পপির রোল নম্বর ৩২৪৩২ দেখা যায়।
কিন্তু কিছুক্ষণ পর তার রোল নাম্বার আর দেখা যায়নি। এর কারণ হিসেবে পপিকে শাহজাহান কবির আরো এক লাখ টাকা না দেয়ার জন্য চাকরি হয়নি বলে জানান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গত ২৬ জানুয়ারি ১৬টি ক্যাটাগরিতে ২১ শূন্য পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। এছাড়াও অপর একটি বিজ্ঞপ্তিতে বৈজ্ঞানিক কমকর্তা (এসও) পদে ১৪ জন লোক নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহবান করে। ১৬ ক্যটাগরির মধ্যে ১ নং ক্রমিকে (এসএ) ফিল্ডম্যান পদের ৪টি শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন করেন পপি। তার রোল নম্বর ৩২৪৩২।
ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ওয়েব সাইট ও একটি দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা যায়, ৩৫ শূন্য পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলেও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃপক্ষ ৫৮ জন লোক নিয়োগ করে। অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করার বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃপক্ষ কোন বক্তব্য দিতে নারাজ।
অসমর্থিত সূত্র জানায়, অনেক লোকের কাছ থেকে নূন্যতম ৭ লাখ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়া হয়েছে। যাদের চাকরি হয়নি তাদের ভবিষ্যতে চাকরি দেয়ার লোভ দেখিয়ে নীরব রাখা হচ্ছে।
এ পর্যায়ে শাহজাহান কবির প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মত অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন। ওই টাকা দিয়ে বর্তমানে ইনস্টিটিউটের পশ্চিম পাশে একটি বিলাসবহুল বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। এরইমধ্যে ভবনের ৬ তলার কাজ শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ( প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) এমরান হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। পরিচালক প্রশাসন শাহজাহান কবির ও ডিজি মহোদয়কে জিজ্ঞেস করেন।
ইনস্টিটিউট এর পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) শাহজাহন কবিরকে বেশ কয়েক বার ফোন করলে তিনি দুই বারের পর ফোন কেটে দেন।
ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক (ডিজি) জীবন কৃষ্ণকে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভি করেননি।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur