চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে দুই মাসের জাটকা সংরক্ষণ অভয়াশ্রম শেষে এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছে না জেলেরা। অন্যান্য প্রজাতির কিছু মাছ পেলেও ইলিশ না পেয়ে হতাশ অধিকাংশ জেলে।
একই সাথে ইলিশ ব্যবসার সাথে জড়িত আড়ৎদার ও শ্রমিকদেরও এখন দিন কাটছে অতিকষ্টে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে সহায়তার দাবী জানিয়েছেন জেলেরা।
কিন্তু মৎস্য গবেষকরা বলেছেন, হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। এখন ইলিশের মৌসুম না। তাই স্বাভাবিকভাবেই ইলিশ কম ধরা পড়বে। বৃষ্টি ও পানি বাড়লে ইলিশ পাওয়া যাবে।
খোঁজ নিয়ে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার জুড়ে ইলিশের বিচরণ থাকে। এখানকার উপকূলীয় এলাকার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলার ৫১ হাজার নিবন্ধিত জেলেসহ বহু জেলে ইলিশ আহরণ করেই জীবন জীবীকা নির্বাহ করে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ সময়ে সকল ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেন। কিন্তু নিষিদ্ধ সময়ে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে লাখ লাখ টন জাটকা ধরে বিক্রি করে। এছাড়াও নদীতে চর জেগে উঠা ও পানি কিছুটা দূষণ হওয়ার কারণে ইলিশের প্রাপ্যতা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
চলমান মৌসুমে একটি নৌকাতে ৫ থেকে ১৫ পর্যন্ত জেলে মাছ ধরতে নেমে অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। আবার কিছু কিছু জেলে ইলিশ ছাড়া অন্যা প্রজাতির মাছ পেলেও তাতে তাদের খরচও মিটছে না। যার ফলে ইলিশ ব্যবসায় জড়িত জেলে, আড়ৎদার, শ্রমিকসহ কেউ কেউ অবসর সময় কাটাচ্ছে।
ইলিশ জেলে ফজল বেপারী, সফিক হালদার জানান, সরকারের দুই মাসের অভিযান মেনে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলেও এখন নদীতে নেমে কোন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছেনা। কারণ অভয়াশ্রমের সময় বহু জাটকা মাছ ধরা হয়েছে।
মাছঘাট মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত চাঁদপুর টাইমসকে জানান, সরকারি নিদের্শনা মোতাবেক দুই মাসে চাঁদপুর মাছঘাটের আড়ৎগুলোও বন্ধ ছিলো। এখন খোলা হলেও ইলিশ না আসার কারণে দৈনন্দিন খরচের টাকাও উঠাতে পারছে না।
ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ইলিশমাছ সাগর থেকে মোহনা হয়ে দেশের প্রধান নদ নদীতে চলে আসে। কিন্তু এসব নদ-নদীতে কিছু দুষণ ও নাভ্যতা সংকট ও মে-জুলাই ইলিশের প্রাপ্যতা কম থাকে। বৃষ্টিপাত হয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে ইলিশ পাওয়া যাবে। জেলেদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট, ৮ মে ২০২১