চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৩ গ্রামের লোকজনের জন্য প্রায় ৭০ বছর পর পূর্নাঙ্গ মাটির রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। এর আগে রাস্তা তৈরি করতে যতবারই মাটির কাজ হয়েছে ততবারই মাটি ক্ষয়ে জমির সাথে মিশেছে।
এই রাস্তার তৈরির কাজ শেষ হলে কমপেক্ষ ৩ গ্রামের ৫০ হাজার লোকের ৮ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ বেঁচে যাবে। ইতোমধ্যে রাস্তাটির প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে। আবার স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের কারণে মাটির কাজ শেষ হলেই পাকাকরণের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের বাকিলার আন্ধারভাঙ্গা থেকে শুরু হয়ে রাস্তাটি দেবপুর রাজারগাঁও সড়কের আমির বাজারে মিলেছে। সম্প্রতি বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইফসুফ পাটোয়ারীর উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে কাজটি শুরু হয়। সন্না ঠাকুর বাড়ির সামনে থেকে শুরু হয়ে গোগরা গ্রামের একাংশ হয়ে শ্রীপুরের আমির বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার মিটার রাস্তা মাটির কাটার কাজ শুরু হয়েছে। উক্ত কাজের অর্ধেটাই ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে বলে সরজমিনে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ বছর পূর্ব থেকে বাকিলা ইউনিয়নের সন্না ও গোগরা গ্রামের একাংশসহ দক্ষিন শ্রীপুর ও উত্তর শ্রীপুরের প্রায় অর্ধলক্ষ জনগন এই সড়ক ব্যবহার করে বাকিলা বাজারে যাওয়া আসা করতো যা এখনো চলমান রয়েছে। এই সড়ক ব্যবহার না করলে এই সকল গ্রামের সবাইকে রাজারগাঁও দেবপুর সড়ক ধরে অতিরিক্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার পথ বেশী পাড়ি বাকিলা বাজারে আসতে হয়।
বিশেষ করে এই সকল গ্রামের মানুষের নির্মাণ সামগ্রী, রোগী, বিয়েসাদীসহ যেকোন মালামাল পরিবহন করতে হলে ৮ কিলোমিটার পথ অতিরিক্ত পাড়ি দেয়াসহ অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হতো। মাটির রাস্তাটির কাজ শেষ হয়ে গেলে উল্লেখিত গ্রামের লোকদের পথ ও অর্থ দুটোই বেঁচে যাবে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তান আমলের বহু পূর্ব হতে এখান দিয়ে মানুষজন হাটাচলা করতো। সেই সময়ের লোকজন বর্ষা মৌসুমে নৌকা চলাফেরা আর শুস্ক মৌসুমে জমি লেভেলে রাস্তা নিয়ে বাকিলা আসা যাওয়া করতো। আশির দশকে শ্রীপুরের বাসিন্ধা তথা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম আবুল কালাম মাটি কেটে এই সড়কের কিছুটা উন্নতি করেন।
এর পরের জনপ্রতিনিধিগন পর্যায়ক্রমে মাটির কাজ করালেও সড়টির স্থানীত্ব আনা সম্ভব হয়নি অর্থাৎ ধীওে ধীরে ধীরে মাটি ক্ষয়ে সুরু আর নীচু হয়ে গেছে সড়কটির। যার কারনে স্থানীয়রা শুস্ক মৌসুমে পায়ে হেটে আর বর্ষা মৌসুমে নৌকায় চলাচল করতো। সম্প্রতি সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান রাস্তা পূর্নাঙ্গ তৈরি করার কাজ শুরু করলে স্থানীয়দের মাঝে আনন্দ দেখা দেয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় শ্রীপুর মাঠের ইরি-বোর প্রকল্পের স্বীম ম্যানেজার তাজুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, প্রায় ৬০ বছর পরে এসে রাস্তাটি পূর্নভাবে করা হচ্ছে এতে আমরা আনন্দিত। রাস্তাটি হয়ে গেলে আমাদেরকে আর দেবপুর হয়ে ঘুরে বাড়ি আসতে হবে না।
গোগরা হাওলাদার বাড়ির মরহুর আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ হাওলাদের বড় ছেলে বাকিলা বাজারের সার ও কীট নাশক ব্যবসায়ী সৈয়দ আহম্মেদ হাওলাদার জানান, ছোট বেলায় বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া আমরা এই সড়কে চলাচল করতে পারতাম না। এখন যেভাবে রাস্তা তৈরি হচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, কাজ করতে গিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সবাই রাস্তার ধরন দেখে খুশি।
বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, রাস্তাটি তৈরিকালে অনেক প্রতিবন্ধকতা পাচ্ছি। তারপরেও যত বাঁধা আসুক এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য আমি এর কাজ শেষ করবো। মাটির কাজ শেষ হলে পাকাকরনের ব্যাবস্থা হাতে নেয়া হবে। কারণ রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য আমাদের মাননীয় সাংসদ মেজর অব.রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি মহোদয় অনেক আগেই ডিও লেটার দিয়েছেন।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট,১ মে ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur