Wednesday, 22 July, 2015 05:50:38 PM
চাঁদপুর টাইমস, কক্সবাজার:
যেদেশে মেয়েদের মন খুলে সাঁতার কাটা কিংবা সাতার শিখার জন্য নেই কোন সুন্দর পদ্ধতি সেদেশে থেকে স্রোতের সাথে নিজেকে ভাসানোর স্বপ্ন দেখা অনেক দু:সাধ্য বিষয়। কিন্তু সমাজ ও পরিবারের ভাবনা তথা স্রোতের বিপরীতে গিয়ে সমুদ্রের স্রোতের সঙ্গেই ভালোবাসার সম্পর্ক করেছেন কক্সবাজারের নাসিমা আক্তার। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নারী সার্ফার।
নাসিমাকে এক্ষেত্রে শুধু একজন অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করলেই চলবে না, তিনি একজন যুদ্ধবিজয়ীও। বয়স যখন মাত্র সাত, তখন থেকেই গৃহহীন নাসিমা। বাবা-মা ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র তাদের কথামতো যৌনপেশায় নিয়োজিত না হওয়ার কারণে।
কিন্তু একসময় কক্সবাজারের সার্ফিং কমিউনিটিতে নতুন আশার হদিস পান নাসিমা। সার্ফিং। আশাটাই একসময় তার নেশায় পরিণত হয়। ক্লাবে সার্ফিং শেখার প্রতিযোগিতায় স্থানীয় ছেলেদেরও পরাস্ত করতে শুরু করেন তিনি।
তার গল্প দাগ কাটে ক্যালিফোর্নিয়ার ডকুমেন্টারি সিনেমা নির্মাতা হিথার কেসিঞ্জারের। নাসিমাকে নিয়ে বানানো তার ডকুমন্টারি ‘দি মোস্ট ফিয়ারলেস’ এ মাসের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দিয়েছেন হিথার।
ডকুমেন্টারিতে নাসিমার জীবনের গল্প আছে, আছে নানান উত্থান-পতনের গল্পও। তবে সব ছাপিয়ে তার সংগ্রামটাই সবচেয়ে বড়। পানি দাপিয়ে বেড়ানোর জন্য নাসিমাকে ‘বেশ্যা’ও বলতে চান এলাকার কিছু লোক।
কেসিঞ্জার বলেন, নাসিমা একজন ভালো মুসলিম স্ত্রী হতে চান, হতে চান তার সম্প্রদায়ের শ্রদ্ধেয় নারী। কিন্তু নিজের ভালো লাগাকেও বিসর্জন দিতে চান না। নিজের গল্প শুনিয়ে সব মেয়ের জন্য থাকা বাধার বিশাল পাহাড়টা ভেঙেছেন নাসিমা।
আর পেয়েছেন তিনটি উপাধি: অগ্রদূত, জীবন যুদ্ধে টিকে থাকা মানুষ এবং আদর্শ পথিকৃৎ।
চাঁদপুর টাইমস : ডিএইচ/২০১৫।
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।