মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
তবে এবার একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে কণ্ঠে কণ্ঠে সেই গান- ‘‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি… আমি কি ভুলিতে পারি…’’ সহ কোন দেশাত্ববোধক গানটি বাজাতে শুনা যায়নি। শুধু তাই নয়, পুরো আয়োজনটি ছিলো সাদামাটা। এবার একুশ উদযাপনের কর্মকান্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।
এদিকে একুশ উদযাপনের সময় হলে শুরু হয় শহীদ মিনার ধোয়ামোছার কাজ। কিন্তু, এ মাসটি চলে গেলে বছরের বাকি ১১ মাস নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের দায়সারা কাজ এবং প্রশাসনের নজরদারির অভাবে বছরের প্রায় ১১ মাস জুড়েই ভাবমূর্তি সংকটে থাকে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নির্মিত শহীদ মিনারটি।
সেখানে গিয়ে দেখা যাবে শহীদ মিনারের চারপাশের জায়গা দখল করে বসেছে বেশ কিছু অস্থায়ী টংয়ের দোকান। পিছনের অংশে দেখা মেলে কিছু মাদকাসক্তের আনাগোনা। এছাড়া শহীদ মিনারে পুরো অংশ জুড়ে তৈরি হয় বড় বড় ঘাসের সাথে ময়লা আবর্জনার স্তুপ।
রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। রক্তের দামে এসেছিল বাংলার স্বীকৃতি আর তার সিঁড়ি বেয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে সারা বিশ্বে। কিন্তু সেই দিবসটি যদি দায়সারা ভাবে পালিত হয়, এতে যে কারোর মধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ পাবে।
এদিকে ২১ ফেব্রুয়ারি রোববার ১২টা এক মিনিটে শুরু হয় চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেন। পুরো শহীদ মিনার জুড়ে আলোর সল্পতা কম থাকায় আগতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজ শিক্ষক বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে বাংল ভাষা পেয়েছি। সেই শহীদদের আয়োজন সাদামাটা, তা খুবই দু:খজনক। রাতে শহীদদের স্মরণে কোন গানই ছিলো না। শুধু তাই নয় ভিতরের অংশে আলোর স্বল্পতা ছিলো।
শহীদ মিনারে ইমতেয়াজ নামের একজন শহরবাসী বলেন, দিন দিন আমাদের দায়িত্ব মনে হয় কমে যাচ্ছে। আগে শহরের মোড়ে মোড়ে শহীদদের স্মরণে গান শুনা যেতো, এবার তা শুনা যায়নি। রাত থেকে শহীদ মিনারে দেশাত্মবোধক গান বাজানোর দরকার ছিলো কিন্তু তা করা হয়নি। পুরো আয়োজনে প্রশাসনের ট্রুটি রয়েছে।
এদিকে চাঁদপুরে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন নিয়ে সংশ্লিষ্ট কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্টাফ করেসপন্ডেট,২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১