স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :
হিজড়াদের প্রকাশ্য চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ রাজধানীর সব শ্রেণি পেশার মানুষ। ঈদ আসতেই বেড়ে যায় তাদের উৎপাত। কোনো ভিত্তি না থাকলেও এদের ভয় পায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। অফিস-আদালত, বিপনি বিতান, বাসা-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, পরিবহন সর্বত্র এদের উপস্থিতি জনমনে রীতিমত আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। একবার কাউকে ধরে বসলে চাঁদা না দিয়ে তার রক্ষা নেই। না দিলে পরনের কাপড় খুলে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলা হয় পরিবেশকে। এভাবে অবিরাম চলছে হিজড়াদের প্রকাশ্য নগ্ন ব্ল্যাকমেইলিং।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশ সদস্যরাও পর্যন্ত হিজড়াদের ভয় পায়। আক্রান্তের ভয়ে অনেক ক্ষেত্রে হিজড়াদের প্রকাশ্য ব্ল্যাকমেইলিং দেখেও নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। তাদের ভাষায়, হিজড়াদের আইন আদালত বুঝিয়ে লাভ নেই। এরা বেপরোয়া জীবন যাপনে অভ্যস্ত। পাঁচ দশ টাকার জন্য ছোট বাচ্ছা কিংবা মেয়ে লোকের সামনে কাপড় খুলতে দ্বিধা করে না হিজড়ারা।
জল ও স্থল পরিবহনের যাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছেন না হিজড়াদের চাঁদাবাজি থেকে। রোববার সকালে বিমানবন্দর রেল স্টেশনে কথা হয় চট্টগ্রাম থেকে আসা আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রী জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে। তিনি জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত আসতে মোট তিন দফা হিজড়াদের চাঁদাবাজির শিকার হন। যাত্রীরা পাঁচ টাকা করে দিতে চাইলেও হিজড়া নেত্রী সীমা ১০ টাকা রেট ধার্য করে দেন। কেউ ১০ টাকার কম দিতে চাইলে তার কোলে বসে পড়েন। এ পরিস্থিতি এড়াতে সবাই তড়িঘড়ি টাকা দিয়ে বাঁচেন।
এদিকে সরকারি বেসরকারি অফিসের অসংখ্য ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, হিজড়াদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। যে কারণে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে হিজড়ারা। অফিস-আদালতে হিজড়াদের চাঁদাবাজির রেট কমপক্ষে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। মনিকা নামের এক হিজড়া বলেন, আপনাদের মতো আমরাও ঈদ করবো। আপনারা টাকা না দিলে আমরা কোথা থেকে পাবো। মনিকার ভাষায়, সরকারকে বলেন, আমাদের কাজ দিতে। তখন আমরা আর আপনাদের কাছ থেকে টাকা নিতে আসবো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. নেহাল করিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিজড়াদের আবদারের সঙ্গে অনেকটা একমত পোষণ করে তিনি বলেন, কাজ না পেলে করবেটা কী?
তবে এটাও সত্যি এরা দিনে যত টাকা চাঁদাবাজি করে কাজ করে এত টাকা আয় করা সম্ভব নয়। যে কারণে হিজড়াদের এ পথ থেকে ফেরানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন ড. নেহাল করিম।
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, ২৭ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, রোববার ১২ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur