“আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি। একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে, তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে। পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক-খান হাড়, সাক্ষী দিছে অনাহারে কদিন গেছে তার।”
চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ উপজেলা ডাকাতিয়া নদীর কোল ঘেষে মোহাম্মদপুর গ্রামের দিনমজুর রফিকুল ইসলামের পরিবার যেন পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের অমর কবিতা ‘আসমানী’র প্রতিচ্ছবি। মধ্যম আয়ের পথে হেঁটে চলা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের সুখ কিংবা আনন্দ তাদের স্পর্শ করে না। কুড়িয়ে আনা খড়কুটো, চট আর প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বস্তায় মোড়ানো ছোট্ট একটা ঝুঁপড়ি ঘর। সেখানেই স্ত্রী, শিশুসন্তান নিয়ে ৪ জনের সংসার। বৃষ্টির প্রয়োজন পড়ে না, শীতের কুয়াশাতেই বিছানা-বালিশ ভিজে যায়। সেই বিছানায় শুয়েই রাতের পাহারাদার জোছনাবিলাসি চাঁদ দেখা যায়। এইভাবে দিনন গেলেও পেটের ক্ষুধারা মানে না, দু’মুঠো ভাতের জন্যে ছোট্ট শিশুটির কাঁন্নায় ব্যর্থ বাবা-মাও কাঁধে।
ভাগ্যাহত দিনমজুর রফিকুল ইসলাম হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্তব্যপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। পিতা নজুমউদ্দিন একজন কৃষক। মা রাফিয়া বেগম গৃহিনী। ৮ ভাই বোনের আভাবের সংসারে রফিকুল ইসলামের অবস্থান ৫ম। বিয়ে করেছেন বেশ কয়েক বছর হলো। অন্ধকার ঘরে কুপির আলো নিয়ে তাদের কোলজুড়ে রয়েছে ৪ বছরের কন্যা ও দেড় বছরের পুত্র সন্তান। অভাব গুছাতে এনজিওর দারস্ত হয়েছিলো রফিকুল।
কিন্তু এতে করে অবাব দূর হওয়া তো দূরে থাক হয়েছে এর উল্টোটা। এসজিওর কিস্তি ও ঋন বাবদ ৬০ হাজার টাকার দেনা এখন মাথার উপর ভর করেছে। দিনে দিনে এর ওজন বেড়েই চলেছে। সরকার, জনপ্রতিনিধি কিংবা অর্থশালী কারো সহায়তা পেলে ভাগ্যাহত রফিকুলের মাথার বোঝাটা নিশ্চই আর থাকবে না। হয়তো থাকবে না, তাদের ঝুপড়ি ঘরের বড় বড় ফুটো ভেদ করে আসা কুয়াশা, দারিদ্রতার অন্ধকার। রফিকুল ইসলামকে সহযোগিতা করতে চাইলে এই 01826-072927 এই মোবাইল নম্বরে হ্যালো বলতে পারেন যে কেউ।
প্রতিবেদক : আশিক বিন রহিম, ১ জানুয়ারি ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur