শরীফুল ইসলাম, চাঁদপুর :
চাঁদপুরে বিএসটিআই’র অনুমোদনবিহীন দুগ্ধ ‘মাঠা’র ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ এবং বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়া পুরাণবাজারের ঘোষপাড়ায় গড়ে উঠেছে ৪টি কারখানা।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মান নিয়ন্ত্রক ল্যাবে পরীক্ষা ছাড়াই এই ‘মাঠা’ বাজারজাত করা হয়েছে। অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে কোনোরকম মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না রেখে নিজেদের মনগড়া মতো প্রতিষ্ঠানের নাম ও লেভেল লাগিয়ে বোতলজাত করে চাঁদপুরের বিভিন্ন জেলায় এই ‘মাঠা’ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এসকল ‘মাঠা’র বিষয়ে কোনো বিএসটিআই বা সরকারের অনুমোদন না থাকায় সরকার যেমন হারাচ্ছে রাজস্ব তেমনি করে সাধারণ জনগণও খাচ্ছে ধোঁকা।
মঙ্গলবার সরজমিনে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার এলাকার ঘোষপাড়ায় এই চিত্র দেখা গেছে। এক একটি কারখানায় নেই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নেই সুষ্ঠু মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, অস্বাস্থ্য পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার ‘মাঠা’।
দুধের মধ্যে পানি মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘অরিজিনাল পিউর মাঠা’। পুরাণবাজারে এসকল ‘মাঠা’র কারখানাগুলো বাড়ির ভেতরে থাকায় স্বচোখে না দেখার কারণে বুঝা যায় না যে, কীভাবে তৈরি হচ্ছে এই অপুষ্টিকর ‘মাঠা’।
লেভেলের গায়ে ফুড গ্রেড লেখে এই ‘মাঠা’ বাজারজাত করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ না বুঝেই হরহামেশায় এ অস্বাস্থ্যকার ‘মাঠা’ কিনে পান করছেন।
বিগত ক’দিন পূর্বে এই ‘মাঠা’র বিরুদ্ধে ইনডিপেডেন্ট টিভির ক্রাইম সিরিয়াল তালাশের অনুন্ধানের বেরিয়ে এসেছিল যে, আসল ‘মাঠা’ কীভাবে তৈরি হয়। বাজারজাতকরণকৃত মাঠার গায়ের লেভেলে লেখা হয়, গরুর দুধ, চিনি, পানি ইত্যাদি রয়েছে। কিন্তু মানুষের চোখের আড়ালে রাতের অন্ধকারে তৈরি হচ্ছে ভেজাল টিস্যু, টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করে।
চাঁদপুর পুরাণবাজার ঘোষপাড়ায় অমর ঘোষের অজয় পিউর মাঠা, কৃষ্ণ ঘোষের স্বজন পিউর মাঠা, শীতল ঘোষের অর্পিতা পিউর মাঠা, শুভংকর ঘোষের বৃষ্টি পিউর মাঠা এই ৪টি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজ বাড়িতে প্রতিদিন মাঠা বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করছে। এদের মধ্যে শীতল ঘোষ তার বাড়িতে গোপন কক্ষে মেশিন বসিয়ে টিস্যু পেপারের মাধ্যমে ভেজাল ছানা তৈরি ও ভেজাল ঘিসহ মাঠা তৈরি খবর পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদক সেখানে গেলে ওই বাড়িতে প্রবেশের পরেই গোপন কক্ষটি দ্রুত তালা মেরে সরে যায় মালিকপক্ষ। এছাড়া প্রাণকৃষ্ণের দীর্ঘদিন যাবত ভেজাল মাঠা তৈরি করে বোতলজাত আকারে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা এ সকল ভেজাল মাঠা বিক্রির রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে। তাদের এই মাঠা খেয়ে সাধারণ মানুষ পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে অর্পিতা পিউর মাঠার মালিক শীতল ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বোতলজাত মাঠার কোনো বিএসটিআই’র অনুমতির প্রয়োজন হয় না। জেলা মার্কেটিং অফিসার, প্রসাশনকে প্রতি মাসিক মাসোহারা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে।’
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ১২:২০ পূর্বাহ্ন, ২৩ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, বুধবার ০৮ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur