একে একে জন্ম নিয়েছে পাঁচ কন্যা সন্তান। ছেলের আশায় আবারও গর্ভধারণ। কিন্তু বিধি বাম, এবারও ছেলে হলো না। একসঙ্গে জন্ম নিয়েছে তিন কন্যা। তাইতো আট মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় মা ফাতেমা। দিনমজুর সাইফুর-ফাতেমা দম্পতির তিন কন্যা শিশুর ভরণ-পোষণের সামর্থ্য না থাকায় ফেসবুকে শিশু তিনটি দত্তক দেওয়ার কথা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন তাদের এক আত্মীয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ নওদাপাড়া গ্রামের ফাতেমার সঙ্গে ২০ বছর আগে ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর গ্রামের দিনমজুর সাইফুর রহমানের বিয়ে হয়।
এক এক করে তাদের সংসারে আসে ৫ মেয়ে। বড় মেয়কে এক বছর আগে বিয়ে দিয়েছেন। বাকি চারজনের একজন নবম শ্রেণি, একজন সপ্তম শ্রেণি এবং দু’জন শিশু শ্রেণিতে পড়ে। হতদরিদ্র পরিবারে পাঁচ মেয়েকে নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে দিন কাটলেও একটি ছেলে সন্তানের আশায় আবারও গর্ভধারণ করেন ফাতেমা।
১২ অক্টোবর একসঙ্গে ৩ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ফাতেমা। একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে ১ সপ্তাহ ধরে ফাতেমা অসুস্থ বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
ফাতেমার মা রহিমা বেগম বলেন, ‘ছেলের আশায় একে একে ৫ মেয়ে হওয়ার পর এবার একসঙ্গে ৩ মেয়ের জন্ম হইছে। ফাতেমার শরীর ও মন দুটাই খারাপ। এতগুলা বাচ্চা মানুষ করবে কেমন করি!’
ফাতেমার মামা মেহের আলী জানান, জন্মের পর তিন শিশুর শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও ফাতেমার অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। পল্লি চিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসা নিলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য নেই তার। ছেলের আশা করলেও একসঙ্গে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় ফাতেমার মন ভালো নেই। তার স্বামীও নাখোশ, অনেকটা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। এতগুলো সন্তানের ভরণ পোষণ নিয়ে তারা চিন্তিত।
তাই সদ্য জন্ম নেওয়া তিন মেয়েকে দত্তক দেওয়ার চিন্তা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়েছিল। তবে আপাতত সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। ফাতেমা সুস্থ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বার্তা কক্ষ , ১৯ অক্টোবর ২০২০