Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরের কৃতি সন্তান সাবেক এমপি অ্যাড.আবু জাফর মইনুদ্দিনের জীবনকথা
পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া-ধনাগোদার, পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া-ধনাগোদার

চাঁদপুরের কৃতি সন্তান সাবেক এমপি অ্যাড.আবু জাফর মইনুদ্দিনের জীবনকথা

পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া-ধনাগোদার আর্শীবাদপুষ্ট দেশের অনন্য এক জেলার নাম চাঁদপুর। নদী বিধৌত এই জনপদ তার গর্ভে ধরেছেন দেশবরেণ্য বহু সূর্য সন্তানকে। যারা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, চিকিৎসা,শিল্প-সাহিত্য, সাংস্কৃতি কিংবা ক্রীড়া জগতকে সমৃদ্ধ করণে রেখেছেন বিশেষ ভূমিকা।

চাঁদপুরর নতুন প্রজন্মের কাছে এই গুণি মানুষদের পরিচয় করিয়ে দিতে ‘চাঁদপুর টাইমস’ এর আয়োজন ‘দ্যুতিময় চাঁদপুর’। ধারাবাহিক এই আয়োজনে আজ থাকছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক এমপি অ্যাড.আবু জাফর মইনুদ্দিন এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা।

চাঁদপুরের কৃতি ব্যক্তিত্ব অ্যাড.আবু জাফর মইনুদ্দিন। তিনি একাধারে একজন বরেণ্য রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক,বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজহিতৈষী এবং প্রখ্যাত আইনজীবী। ছিলেন সফল সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া-ধনাগোদার, পদ্মা-মেঘনা-ডাকাতিয়া-ধনাগোদার

এই সূর্যসন্তান ১৯৩৯ সালের ২৮ অক্টোবর হাজীগঞ্জ উপজেলার ছয়ছিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আলতাফ উদ্দীন আহমেদ, মাতা জোবেদা খাতুন। দাম্পত্য জীবনে দুই পুত্র ও চার কন্যার জনক। সন্তানদের মধ্যে বড় মেয়ে অ্যাড. নূরজাহান বেগম মুক্তা আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য, জোবায়দুর রহমান পুলিশ সুপার, রাবেয়া ফেরদৌসী গৃহিণী, ফারহানা ফেরদৌসী (রুমা পাটওয়ারী) চাঁদপুর জেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক, মেয়ে শাহানা ফেরদৌসী একজন ব্যাংকার এবং ছোট ছেলে আলতাফ মাহমুদ।

অ্যাড. আবু জাফর মইনুদ্দিন বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। ঢাকায় তৎকালীন ইকবাল হলে (বর্তমান জহুরুল হক) থেকে লেখাপড়া করতেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এই রাজনীতিক ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ এবং নব্বইয়ের গণআন্দোলনসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া এবং মন্ত্রিত্ব গ্রহণের প্রস্তাবকে না করায় দীর্ঘ সাত মাস কারাবরন করেন তিনি।

মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত (১৯৭৪-১৯৯২) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তৎকালীন হাজীগঞ্জ-মতলবের একাংশের চাঁদপুর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেন। রাজপথে নিজ দল এবং অপরাপর রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সাথে নিবিড় ও সুন্দর সুসম্পর্ক রাখার জন্যে সর্বজনশ্রদ্ধেয় ছিলেন তিনি। আবু জাফর মইনুদ্দিন অন্ধ কল্যাণ সমিতির সভাপতি, তৎকালীন চাঁদপুর মহিলা কলেজের গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান, রেডক্রসের প্রধান, চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির একাধিকবারের সভাপতি এবং সেক্রেটারি,চাঁদপুরে ক্লাবের আজীবন সদস্য, বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী বরেণ্য এই আওয়ামী লীগ নেতা ১৯৯২ সালের ৪ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।

লেখক : আশিক বিন রহিম, সাহিত্য ও সংবাদর্মী,৫ অক্টোবর ২০২০