অপরাধীকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। অবশ্য অপরাধী ধরতে আমাদের শতভাগ সাহায্য ও সহযোগিতা করতে হবে। তদুপরি কঠোর ও শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ও তার কঠোর প্রয়োগ অবক্ষয় বা বিকৃত এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। যেন আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে অপরাধীরা পার না পায়, সে বিষয়ে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। শিক্ষা বা ধর্মীয় অপব্যাখ্যা বন্ধ করতে হবে। এজন্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগব্যবস্থা তদারকি করতে হবে কঠোরভাবে। জনসাধারণকে এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। তাই বলা যায় সরকার, জনসাধারণ, বুদ্ধিজীবীরা সবাইকে একই প্ল্যাটফরমে আসতে হবে। আর এটাই হবে সামাজিক অবক্ষয় থেকে বাঁচার একমাত্র পথ।
৩ অক্টোবর শনিবার আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট নূরজাহান বেগম মুক্তা, ইতালি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল, অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুমান মাহফুজ। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন গণমাধ্যমকর্মী গোলাম মর্তুজা জুয়েল।
এডভোকেট নূরজাহান বেগম মুক্তা বলেন, ইদানিং ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। এটা একটি সামাজিক অপরাধ। সামাজিক অপরাধ বলতে যা বুঝি আমরা তা হলো, আইনে নিষিদ্ধ কাজগুলোকেই আমরা সামাজিক অপরাধ বলে গণ্য করি। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা তিন বার ধরে ক্ষমতায় আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা পৃথিবীতে নারীদের অগ্রগতিতে একটি রোল মডেল। নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মর্যাদাকে উনি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলের নেতা নারী, স্পিকার নারী। এবং আদালতের সর্বোচ্চ স্থানেও নারীরা রয়েছে। বাংলাদেশে সেই ট্রেন চালক থেকে শুরু করে সরকার চালক পর্যন্ত নারী রয়েছে।
এই যে আমাদের দেশে নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে বর্তমান কিছুদিন ধরে যেসব ঘটনা হচ্ছে তা খুবই দুঃখজনক। দেখা যাচ্ছে কিছু ছাত্র সংঘটনের সাথে জড়িত কিছু ব্যক্তিদের নাম আসছে এটা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু এটাও ঠিক যে অপরাধীর হাত যতই লম্বা হোক আইনের হাত তার থেকে বেশী লম্বা।
এই ঘটনার সাথে ছাত্রলীগের যাদের নাম আসছে তাদের ধরা হয়েছে এবং তাদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে। আপনারা খেয়াল করলে দেখতে পারবেন যে ২০০১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসলো তখন সেই পূর্ণিমা, মহিমা, ফাহিমা, নজুফা থেকে শুরু করে অনেক নৃশংস ঘটনায় ঘটেছে তাদের আমলে। আমার আসল কথা হলো, এখন এই যে ঘটনা গুলো ঘটছে তার পিছনে অবশ্যই কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে।
এর মধ্যে আমি কিছু মোটা দাগের কারণ গুলো উল্লেখ করব তা হলো আমাদের পরিবারে সামাজিক বন্ধনের অভাব, আমাদের শিক্ষার অভাব, আমাদের আর্থিক দৈন্যতা, আমাদের বিচার প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং সর্বোপরি আমাদের তথ্য-প্রযুক্তির যে অপব্যবহার হচ্ছে।
আমাদের এই সরকার তার নিজের দলের হোক বা তার নিজের ছাত্র সংঘটনের হোক, এই অপকর্মের সাথে যারা জড়িত আছে তাদের কাউকেই কিন্তু ছাড় দিচ্ছে না।
ঢাকা ব্যুরো চীফ, ৪ অক্টোবর ২০২০