করোনাভাইরাস মহামারির পর পাঠদান আধুনিকায়ন করে কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ও ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (জনসংখ্যার লাভ) অর্জনের জন্য নজর রাখতে হবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে।
কোভিড-১৯-উত্তর পরিস্থিতিতে তরুণদের অবস্থা নিয়ে নীতিনির্ধারকের ভাবনাসংক্রান্ত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় এসব কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
আজ শনিবার বেলা ১১টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক ছিল ইয়াং বাংলা। এটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
আজকের অনুষ্ঠানে দীপু মনি বলেন, ‘সামনে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য বিগ ডেটা,ব্লক চেইন… এগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রযুক্তির টোটাল ট্রান্সফরমেশন হবে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারাটা আমাদের নতুন চ্যালেঞ্জ। আমাদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলো কারিগরি শিক্ষা।’
মন্ত্রী জানান, ২০১০ সালে প্রণয়ন করা ন্যাশনাল পারসপেকটিভ প্ল্যান আধুনিকায়ন করার পাশাপাশি শিক্ষা আইনও চূড়ান্ত করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষাকে পুরোপুরি ট্রান্সফর্ম করার জন্য চেষ্টা করছি। সবাই অনুভব করছি… একটা কারিকুলাম আমাদের আছে, সেটাকে ক্রমাগত আপডেট করতে হবে। কারণ বিশ্ব খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। কারিকুলামে (শিক্ষাক্রমে) ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করছি।’
২০২১ সালে নতুন কারিকুলামের পাঠ্যপুস্তক বিদ্যালয়গুলোতে দেওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে তা পিছিয়ে ২০২২ সালে নিয়ে যেতে হচ্ছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের জন্য বাজার অর্থনীতির দিকে নজর রাখতে হবে বলে মনে করেন দীপু মনি। তিনি বলেন, কারিকুলাম প্রণয়নের পাশাপাশি দক্ষ শিক্ষক তৈরিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ১ লাখ ২ হাজার মানুষ ফেরত এসেছেন।
তাঁর মন্ত্রণালয় বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে আবার প্রশিক্ষিত করে বিদেশে পাঠাতে নজর রাখছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি যে ফিল করি, যেখান থেকে ট্রেনিং হোক না কেন, আমরা ওদের প্রশিক্ষিত করে ওদের আবার বিদেশে পাঠাই। কারণ দেশে অত শর্ট টার্মে অত কর্মসংস্থান করতে পারছি না। যারা যারা রেডি হবে, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আমি দ্রুত দেশের বাইরে পাঠাতে চাই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি পাঠাতে পারব, সরকার এটাতে সফল হয়েছে। তবে এখানে রিসার্চের দরকার আছে, কোন দেশে কী হবে না হবে… ৩০টা দেশে লেবার কনস্যুলার আছে। আমি বলেছি ওখান থেকে খবর দিতে… ওই দেশে মানুষ, কী ধরনের দক্ষতা প্রয়োজন আছে।’
দেশে এখন ৬৪টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার—টিটিসি আছে। আরও ৪০টি টিটিসি ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে চালু হবে বলে আশা করছেন ইমরান আহমদ। আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে আরও ৭১টি টিটিসির জন্য ডিপিপি সাবমিট করবে প্রবাসীকল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ইমরান বলেন, ‘প্রত্যেক উপজেলায় একটা করে টিটিসি আমরা করব। এটা কিন্তু আমাদের প্রয়োজন আছে বিদেশ মানুষ পাঠানোর জন্য। আমাদের লক্ষ্য, আমরা প্রতিটি উপজেলা থেকে অন্তত ১ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষিত করে বিদেশে পাঠাব।’
বিশ্বব্যাংকের পলিসি প্রকিউরমেন্টের পরামর্শক মো. ফারুক হোসেইন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। আলোচনায় যুক্ত হয়েছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাবিষয়ক সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, এসবিকে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সোনিয়া বশির কবির, আইএলওর জাতীয় প্রোগ্রাম অফিসার তানজিলুত তাসনুবা, বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টারের এজাজ আহমেদ, ইয়াং বাংলার কো-অর্ডিনেটর হাবিবুর রহমান এবং জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ইমরান মৃধা।
বার্তা কক্ষ,৫ সেপেটম্বর ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur