চাঁদপুর হাইমচরে মেঘনায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার আকার ধারণ পানিতে ভাসছে গ্রামগুলো। আর এ বন্যার পানিতে ধরা পড়ছে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার।
২৩ আগস্ট রোববার দুপুরে কাটাখালি বাজারের পূর্ব পাশে ছৈয়াল বাড়ির কাছে এই “রাসেল বাইপার” সাপটি ধরা পড়ে।চরভৈরবী নীলকমল এই সব ইউনিয়নে ৩ টি সাপ ধরা পড়েছে। এই নিয়ে হাইমচরে মোট ৪ টি সাপ ধরা পড়েছে।
এই বিষধর সাপটি জোয়ারের পানি বেশি হওয়ার কারনে বিভিন্ন এলাকাতে প্রবেশ করেছে। ধরা পরলো বিশ্বের মধ্যে ৫ নাম্বার সাপ রাসেল ভাইপার। বন্যার পানিতে ঝুঁকি হলো বিষাক্ত সাপ ও কীটপতঙ্গ।
বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার বৈজ্ঞানিক নাম উধনড়রধ Daboia Russelii. স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়া নামে পরিচিত হলেও রাসেল ভাইপার নামেই অধিক পরিচিত। এরা ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত। এটি আমাদের দেশে দুর্লভ। কালে ভদ্রে এদের দেখা মেলে। তবে সম্প্রতি রাজশাহীর পদ্মার চরে এ সাপটির দেখা মেলে। আর এই দুর্লভ সাপটিকে ক্যামেরাবন্দী করে নেন বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী লিসান আসিব খান।
সাপ বিষারদরা জানান, তীব্রতার দিক দিয়ে এ সাপটি বিশ্বের ৫ নম্বর ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। মাত্র ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে কাউকে কামড়ে বিষ ঢালতে পারে! তাই কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে ছাড়িয়ে রাসেল ভাইপার প্রথম স্থান দখল করে আছে। এ ছাড়া এ সাপটির বিষ দাঁত বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ। পৃথিবীতে প্রতি বছর যত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়, তার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা যায়। এদের বিষ হোমটক্সিন, যার কারণে কামড় দিলে মানুষের মাংস পচে যায়। এ সাপের দেহ অনেক মোটাসোটা। লেজ ছোট ও সরু। প্রাপ্তবয়স্ক সাপের দেহের দৈর্ঘ্য সাধারণত এক মিটার।
এরা নিচু জমির ঘাসযুক্ত উন্মুক্ত জায়গায় কিছুটা শুষ্ক পরিবেশে বাস করে। খাদ্য হিসেবে ইঁদুর, ছোট পাখি, টিকটিকি ও ব্যাঙ খেয়ে জীবন ধারণ করে। এরা শিকারের সময় প্রাণীকে কামড় দিয়ে ছেড়ে দেয়। এরা বছরের যে কোনো সময় প্রজনন করে। ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, চীনের দক্ষিণাংশ, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় এদের দেখা যায়। ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ও সরীসৃপ গবেষক শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে দুর্লভ। এক সময় মহাবিপন্নের তালিকায় থাকলেও এখন রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা মেলে।
এ সাপের অ্যান্টিভেনম এখন বাংলাদেশেও পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
করেসপন্ডেট,২৩ আগস্ট ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur