বরিশালের আগৈলঝাড়ার উপজেলার বারপাইকা গ্রামে করোনায় সংক্রমিত সন্দেহে এক বৃদ্ধাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন তাঁর ছেলে ও ছেলের বউ। দুই মাস ধরে বসতঘরের বাইরে একটি মন্দিরে রাখা হয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি ছেলের বউয়ের কাছে খাবার আর বয়স্ক ভাতার টাকা চাওয়ায় তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীর নাম জ্ঞানদা ব্যাপারী (৯৫)। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জ্ঞানদা ব্যাপারী স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলে জগদীশ ব্যাপারী (৪০) ও ছেলের বউ শিখা রানীর (৩৫) কাছে থাকতেন। তাঁর নামে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড আছে। ছেলে জগদীশ ব্যাপারী ওই কার্ডের টাকা তুলে ভোগ করেন।
বিভূতি মণ্ডল, বাসুদেব সরকারসহ জ্ঞানদা ব্যাপারীর কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, বয়সের কারণে হাঁচি-কাশি হওয়ায় করোনা সন্দেহে ছেলে ও ছেলের বউ জ্ঞানদা ব্যাপারীকে বাড়ির সামনে বারপাইক্কা মন্দিরের বারান্দায় থাকতে দেন। তাঁকে ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয় না। খাবার ও পরিচর্যার অভাবে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
পাঁচজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গত সোমবার বিকেলে জ্ঞানদা ব্যাপারী তাঁর ছেলের বউ শিখা রানীর কাছে খাবার চান। খাবার না দিলে তিনি বয়স্ক ভাতার টাকা ফেরত চান। এতেই শিখা রানী ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে জগদীশ ব্যাপারী ও শিখা রানী মিলে টানাহেঁচড়া ও মারধর শুরু করেন। এতে জ্ঞানদা ব্যাপারীর শরীরে জখম হয়।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, জ্ঞানদা ব্যাপারীর সঙ্গে এমন আচরণের প্রতিবাদ করতে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে জগদীশ ও তাঁর স্ত্রী তাঁদের গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জগদীশ ব্যাপারী ও তাঁর স্ত্রী শিখা রানী বলেন, বিষয়টি তাঁদের পারিবারিক। নিজেরাই এর সমাধান করবেন।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি অফজাল হোসেন গতকাল বলেন, বৃদ্ধ জ্ঞানদা ব্যাপারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা, খাবার ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।
বার্তা কক্ষ,১৭ জুন ২০২০