করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো: মাজেদুর রহমান খানের নির্দেশনায় জীবন ঝুঁকি নিয়ে মাঠ প্রশাসনে নেতৃত্ব দিয়ে কাজ করছেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ডিডিএলজি’র উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান ।
করোনার শুরু থেকেই তিনি দিন-রাত মাঠে কাজ করছেন । মাসব্যাপি লকডাউন বাস্তবায়নে ও জনসচেতনতায় চষে বেড়িয়েছেন জেলা শহরের প্রতিটি এলাকায় । লকডাউন বাস্তবায়য়ন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্বির লক্ষ্যে মাঠে থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন তিনি। জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে মাঠে সবচেয়ে বেশী তৎপর রয়েছেন তিনি ।
জনবান্ধব এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা দায়িত্ববোধকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মাঠে ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন অসাধু কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছেন। এরমধ্যে সরকারি কাজে তথ্যের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিতে সাংবাদিকদের তথ্যকেন্দ্র হিসেবেও তার ভূমিকা ছিলো বেশ প্রশংসনীয়। নিজের সুরক্ষার চেয়ে জনসুরক্ষার চিন্তা করেছেন বেশিরভাগ সময়েই।
তাই সুরক্ষা ছাড়াই করোনার মতো এত বড় দুর্যোগে সময় জেলা শহরে অভিযান করেছেন এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন । যদিও পরে সরকারিভাবে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে ।তথাপি সুরক্ষা নিয়ে তিনি কখনো চিন্তা করেনি । তিনি প্রতিদিন মাঠে লকডাউন বাস্তবায়নে অভিযান করেছেন । পাশাপাশি করোনা চলাকালে ৮৯টি ইউনিয়ন পরিষদকে সরকারের নির্দেশিত কর্মসূচী সঠিকভাবে বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারদেরকেও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার পাশাপাশি তিনি নিজেই জনপ্রতিনিধিদের কার্যক্রম মনিটরিং করছেন ।
বিশেষ করে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খানের নির্দেশে এডিসি ও ডিডিএলজি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘ত্রাণ যাবে বাড়ি’ প্রধানমন্ত্রীর উপহার কার্যক্রম শুরু থেকেই নিজ দায়িত্বে ও মনিটরিং এর মাধ্যমে সফল ভাবে পরিচালনা করেছেন। চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের সাথে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় এ কার্যক্রমের প্রংশসা করে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য জেলাকেও এটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছিলেন।
বর্তমান সময়ে অনেক শ্রেণি পেশার লোক কাজ করতে পারছে না তাদের খাবারের যোগান দিতেই জেলা প্রশাসন ২০টি মোটর সাইকেলযোগে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ কার্যক্রমের আওতায় ৩১ মে পর্যন্ত ৪ হাজারেও অধিক নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে দেয়া হয়। যার নেতৃত্বে ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
বিশেষ করে যারা চক্ষুলজ্জা ও লোক লজ্জার কারণে কারো কাছে হাত পাততে পারেনি ওই সকল পরিবারগুলোর কাছে এ সংকটকালীন সময়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়াই ছিল এ প্রোগামের মূল উদ্দেশ্য।
এডিজি জামান জানান, এ পরিবারগুলোর সম্মানের কথা ভেবে উপহার গ্রহীতা পরিবারের কারো মুখের ছবিও প্রকাশ করিনি। আমাদের ২ টি হটলাইনে মোট ফোন কল রিসিভ করা হয়েছে ৭,১২৯ টি। তার মধ্যে ৪,০০৫ টি পরিবারের মধ্যে ৪০ জন ভলান্টিয়ারের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌছে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উক্ত উপহার ক্রয়,পরিবহণ,ওজন করা,প্যাকেট করা ইত্যাদি কাজে নিয়মিত ৭ জন স্কাউট ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা,কর্মচারীগণ কাজ করেছেন।‘
প্রায় ৪০জন স্বেচ্ছাসেবক টীম নিয়ে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে বাড়ীতে প্রধানমন্ত্রী উপহার পৌঁছে দেয়ার এ কার্যক্রম চাঁদপুরই নয় দেশ ব্যাপী ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে । খোদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুরের এই কর্মসূচীর প্রশংসা করেছেন ।
এদিকে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জেলা প্রশাসনরে অধীনে সততা স্টোর ,হোটেল রেস্তরায় অহসায় মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেন । তিনি লকডাউন বাস্তবায়ন,মোবাইল কোর্ট,সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জনসচেনতা সৃষ্টি,ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম জোরদার ও সহযোগিতা করা,জেলা প্রশাসনের নির্দেশিত কর্মসূচী বাস্তবায়নে তিনি সর্বদা তৎপর রয়েছেন ।
তিনি একজন জনবান্ধব ও দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে চাঁদপুরে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি । জেলা পুলিশ বিভাগ ও সেনাবাহিনীর প্রতিটি কাজেও সহযোগিতা করছেন ।
এ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, লকডাউন খুলে গেছে তারপরেও চাঁদপুরে জেলা প্রশাসক মো: মাজেদুর রহমান খানের নির্দেশে আমরা টীম ওয়ার্ক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ত্রাণ কার্যক্রম এখনো অব্যাহত আছে। আমাদেরকে কেউ ফোন করে ত্রাণ চাইলে আমরা সেটা দিচ্ছি। এছাড়া করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি সাধারণত লকডাউন থাকে। তাদের বাড়িতে আমাদের প্রশাসনিক টিম খাবর পৌঁছে দিচ্ছে। এর বাইরেও স্বাস্থবিধি মান্য করতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
মাস্ক নিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান শুরু হয়েছে কিন্তু সদরে এখনো শুরু হতে দেখা যায়নি এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘আমাদের এখন স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে কার্যক্রম চালু রয়েছে শহরে। তবে আমাদের টার্গেট রয়েছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহসাই কিছু মাস্ক বিতরণ করবো। সে হিসেবে এখন মাস্ক সংগ্রহের কাজ চলছে। তারপর মাস্ক না পরলে আইনি ব্যবস্থায় যাবো।’
চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট, ৬ জুন ২০২০