‘আসসালামু আলাইকুম। চাচি বাসায় আছেন। আমি পুলিশের এসপি। আপনার বাসায় আর কে কে আছেন? আমরা জেনেছি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বাড়িতে অবস্থান করায় আপনি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। আমি পুলিশের পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি।’
হতদরিদ্র আমেনা বেগমের বাসায় গিয়ে ঠিক এভাবেই ডাক দিলেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার। পরে ওই নারীর হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে একইভাবে গাজীপুরের সদর উপজেলার দরগারচালা গ্রামে হেঁটে হেঁটে স্বল্প আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে গাজীপুর জেলা পুলিশের এক মাসের রেশন থেকে বরাদ্দের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন এসপি শামসুন্নাহার।
বাড়িতে পুলিশ সুপারের আকস্মিক আগমনে অবাক হয়েছেন অনেক হতদরিদ্র মানুষ। এসপির এমন কার্যক্রমের প্রশংসা করেছেন সবাই।
আমেনা বেগম জানান, নয় বছর আগে বার্ধক্যজনিত কারণে স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। দিনমজুর দুই ছেলে পৃথক সংসার পেতেছেন। তাদের দেয়া টাকা-পয়সায় কোনোমতে চলছিল তার একার সংসার। দিনে এনে দিনে খেয়ে চললেও সরকারের অঘোষিত লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছে তার দুই ছেলে।
তিনি বলেন, ঘরে থাকা সামান্য মজুত ফুরিয়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। হঠাৎ খাবার নিয়ে বাড়িতে এসপি আসায় আমার মনটা ভরে গেল। আমি মন ভরে এসপি ও পুলিশের জন্য দোয়া করছি।
ঠিক একইভাবে গাজীপুরের প্রায় সব উপজেলার স্বল্প আয়ের মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে গাজীপুর জেলা পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশের প্রশংসা করেছেন সবাই।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের বাধ্যও করা হচ্ছে। কর্মহীন হয়ে পড়া সাধারণ মানুষকে নিয়ে তাদের খাবারের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। সেই চিন্তা থেকে জেলার ১৭শ পুলিশের এক মাসের রেশনের খাদ্যসামগ্রী স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
বার্া কক্ষ, ৪ এপ্রিল ২০২০