Home / চাঁদপুর / শাহরাস্তিতে স্বামীর যৌতুক মামলায় স্ত্রী চাঁদপুর জেলা কারাগারে
স্ত্রী চাঁদপুর জেলা কারাগারে

শাহরাস্তিতে স্বামীর যৌতুক মামলায় স্ত্রী চাঁদপুর জেলা কারাগারে

বেশিরভাগ সময় স্ত্রীদের যৌতুক মামলায় স্বামীদের কারাগারে যাওয়ার নজির থাকলেও এবার ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে চাঁদপুরে। জেলার শাহরাস্তিু উপজেলায় স্বামীর করা যৌতুক মামলায় স্ত্রীকে চাঁদপুর জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

শাহরাস্তি উপজেলার বানিয়াচোঁ গ্রামের খন্দকার মো. মনির হোসেনের দায়ের করা ২০১৮ সালের যৌতুক আইনের ৩ ধারায় সিআর ১৯৯/১৯ইং মোকদ্দমায় তাহার স্ত্রী মিনোয়ারা বেগমকে জেলে পাঠান বিচারক ও আমলী আদালত শাহরাস্তি এবং সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট -০৩। বিবাদী মিনোয়ারা বেগম কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শাকপুর গ্রামের ইমান আলী কন্য।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মিনোয়ারা বেগম বেপরোয়া জীবন জাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তােই যৌতুকের জন্য তার স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ করতো। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মিনোয়ারা কাউকে কিছু না জানিয়ে এমনকি স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে পালিয়ে গিয়ে জনৈক নাজমুল হকের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করেন এবং অবৈধ স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে কথিত ওই স্বামীর সাথে থাকাবস্থায় ৬ জুলাই পূর্বের স্বামী মনির হোসনকে তালাক দেয় এবং তালাকের তথ্য গোপন রেখে পুনরায় মনির হোসেনের সংসারে ফিরে আসে। তালাকের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেলে বাদীকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে দেনমোহর বাড়িয়ে পুনরায় কাবিননামা তৈরি করে।

এ পর্যায় গিয়েও মিনোয়ারা পুনরায় যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে মিনোয়ারা মুঠোফোনে স্বামীকে যৌতুকের টাকার জন্যে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। ঘটনায় ধারাবাহিকতায় গেলো ৯ জুন মিনোয়ারা তার বাবার বাড়ি চলে যায়।

পরে মনির হোসেন উপায়ান্ত না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ে করেন এবং আদালতের নির্দেশনায় শাহরাস্তি থানার ওসি তদন্ত শহিদুল ইসলাম মামলার তদন্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালত আসামি মিনোয়ারা বেগম এর বিরুদ্ধে সমন জারি করলে আসামী ০৯/০৩/২০ইং তারিখে আদালতে জামিন নিতে আসলে বিজ্ঞ আদালতে তাকে জেলে প্রেরণ করেন ।।

বাদীপক্ষের অ্যাডভোকেট মহসীন খাঁন জানান, ‘যৌতুক নিরোধ আইনের কিছু ক্ষেত্রে অপব্যবহার নারীরা পুরুষদের বিরুদ্ধে পারিবারিক বিরোধ হলেই পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দিয়ে পুরুষদের হয়রানি করে থাকে। অনেক পুরুষ আইন না জানায় নারী দ্বারা নির্যাতন হলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রতিকার পায় না। কিন্তু উক্ত আইনে পুরুষরাও যৌতুক লোভী নারীদের বিরুদ্ধেও প্রতিকার পাইতে পারে এই মামলা ও বিজ্ঞ আদালতের আজকের আদেশ একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে।

স্বামীর করা যৌতুক মামলায় আসামী স্ত্রী মিনোয়ারা বেগম এর পক্ষে আইনজীবী অ্যাড. হান্নান কাজী।

মামলার বাদী খন্দকার মো. মনির হোসেনে সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আসামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং পুরুষ নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন করার জন্য রাষ্ট্র ও সরকারের নিকট আবেদন করেন ।

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ৯ মার্চ ২০২০