কাতার-কুয়েত বাংলাদেশি যাত্রীদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় গন্তব্য দুটিতে সব ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়া বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে সংকট তৈরি হওয়ায় সারাবিশ্বে চালানো ১৪২টি ফ্লাইটের মধ্যে ৬৬টি আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী এ বিমান সংস্থা।
বিমানের এমডি মোকাব্বির হোসেন সোমবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, কাতার সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে আজ ৯ মার্চ থেকে দোহাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটসমূহ পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাতিল করা হল।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় যাত্রী সংকট তৈরি হওয়ায় সারা বিশ্বে চালানো ১৪২টি ফ্লাইটের মধ্যে ৬৬টি আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত সতর্কতা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। বিদেশফেরত যাত্রীদের বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইনে থাকারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ছয় দেশ থেকে আসা যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দেশগুলো হচ্ছে- চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইরান ও থাইল্যান্ড।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ। তিনি বলেন, এ ছয় দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। একই সঙ্গে অবতরণের পর ‘হেলথ ডিক্লারেশন’ ফরম দেয়া হচ্ছে, এখানে তাদের শারীরিক বিষয়সহ বিভিন্ন তথ্য পূরণ করতে হবে। স্বাস্থ্য তথ্য কার্ডও দেয়া হচ্ছে। ছয় দেশ থেকে আসা যাত্রীদের শরীরে জ্বর না থাকলেও তাদের বাধ্যতামূলকভাবে নিজ বাড়িতে বা তারা যেখানে থাকবেন, এখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
তবে বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় যদি যাত্রীর শরীরে তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর বেশি তাপমাত্রা থাকে, তা হলে তাকে সরাসরি কুয়েতমৈত্রী হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত শাহজালাল বিমানবন্দরে ২ লাখ ৬ হাজার ১০ যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬১ জনের জ্বর ছিল। আর পাঁচজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। রোববার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা জানান, ধরা পড়া করোনা রোগী দুজন ইতালিফেরত। তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী। সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,৯ মার্চ ২০২০