বাংলাদেশ দলের সংবাদ সম্মেলনে এমনিতে বেশ শোরগোল হয়। সংবাদ সম্মেলনে শুরুর পরও তার রেশ থাকে। কিন্তু সিলেটের সংবাদ সম্মেলনে ফুটে উঠল ভিন্ন চিত্র। নেতৃত্ব ছাড়া নিয়ে কাগজে লিখে আনা কথাগুলো পাঠ করছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সময় গড়িয়ে চলার সঙ্গে পিনপতন নীরবতা নেমে এল সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। প্রশ্ন ও উত্তর ছাড়া আর কিছু ছিল না। মাশরাফির অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা অবাক করা না হলেও নীরবতাটুকু অনুমিতই ছিল। দেশসেরা অধিনায়কের হাল ছাড়া বলে কথা!
দুপুরের পর শুরু হয়েছিল সংবাদ সম্মেলন। মাশরাফি নিজের ঘোষণা জানানোর পর শুরু হলো প্রশ্ন। প্রথম প্রশ্নটা অনুমিতই ছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছিলেন, অধিনায়ক হিসেবে এটাই শেষ সিরিজ মাশরাফির। আজ তৃতীয় ওয়ানডের আগে মাশরাফি নিজেই সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। তাই প্রশ্ন ওঠে, সিদ্ধান্তটি কি বিসিবির নাকি মাশরাফির বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কের জবাব, ‘সিদ্ধান্তটা আমি নিলাম।’
বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব পেয়েছিলেন মাশরাফি ২০০৯ সালে। মাঝের এই দীর্ঘ সময়ে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেলেও বাংলাদেশ দলকে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেলেন মাশরাফি। এখান থেকে তাঁর পতাকা বহন করে দলকে পরবর্তী ধাপে নেওয়ার মতো কেউ আছেন কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে মাশরাফি কারও নাম বললেন না, ‘নাম বলা কঠিন। খুবই কঠিন। সিনিয়রেরা তো আছে। সাকিব তো এখন বাইরে। সাকিব আসার পর কী হবে, কাউকে দিয়ে শুরু হবে কি না। প্রক্রিয়াটা তো আমি জানি না। তবে আমি নিশ্চিত বর্তমানে যে তিনজন আছে তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য আছে।’
নেতৃত্ব ও মাশরাফি—এ দুটি নাম যে ‘একই বৃন্তে দুটি কুসুম’ হয়ে গিয়েছিল। আর তাই নেতৃত্বের জায়গাটা ছেড়ে দেওয়া মোটেও সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। তা নিতে গিয়ে কতটা আবেগতাড়িত হয়েছেন মাশরাফি? ঠান্ডা গলাতেই তাঁর জবাব, ‘নেতৃত্বকে আমি কখনো এভাবে দেখিনি। জাতীয় দলের খেলাটাই আমার কাছে গর্বের। বিসিবি নেতৃত্বের সুযোগ দিয়েছে। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছি। কখনো হয়েছে, কখনো হয়নি। কিন্তু সিদ্ধান্ত তো নিতেই হতো। সামনে ২০২৩ বিশ্বকাপ আছে। যেহেতু সবাই বলছে পরবর্তী পরিকল্পনা করতে হবে। তাই আমার কাছে মনে হয়, নতুন যে আসুক দলটা এখন থেকেই গুছিয়ে নিক। তবে আমি আশা করব, যে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেটা যেন ঠিক থাকে—এই অধিনায়কই যেন ২০২৩ সালে নেতৃত্ব দেয়।’
বার্তা কক্ষ, ৫ মার্চ ২০২০