ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িত দুই ভাই এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়ার একটি বাসা থেকে নগদ কয়েক কোটি টাকা, পাঁচ কোটি টাকার এফডিআর ও বিপুল পরিমাণ গয়না উদ্ধার করেছে র্যাব। পুরান ঢাকার লালমোহন সাহা স্ট্রিটের এ দুই ভাইয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়।
সোমবার মধ্যরাতের পর এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। নেতৃত্বে ছিলেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।
পুরান ঢাকার ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত র্যাব–৩–এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়জুল ইসালাম জানিয়েছেন,‘ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িত দুই ভাইয়ের ঢাকায় বহু ফ্ল্যাট–বাড়ি রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁরা ২৪টি বাড়ির খোঁজ পেয়েছেন। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তাঁরা পুরান ঢাকার এ বাড়ির খোঁজ পান। এর পরপরই এখানে অভিযান চালিয়ে এসব সম্পদ জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, উদ্ধারকৃত টাকা এখনো গণনা শেষ হয়নি। পুরো সম্পদ জব্দের প্রক্রিয়া চলছে। এসব টাকা ট্র্যাংক, সিন্দুকসহ বিভিন্ন স্থানে সুন্দর করে থরে থরে সাজানো ছিল।
এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়া এখন কারাগারে আছেন। ক্যাসিনো কারবারি এই দুই ভাইকে গত জানুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গত বছর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই দুই ভাই আলোচনায় আসেন। শুরু থেকেই তাঁরা পলাতক ছিলেন।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল ও রূপনের বাসায় এবং তাঁদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এরপর সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়।
এনামুল ও রূপন গত ছয় থেকে সাত বছরে পুরান ঢাকায় বাড়ি কিনেছেন কমপক্ষে ১২টি। ফ্ল্যাট কিনেছেন ৬টি। পুরোনো বাড়িসহ কেনা জমিতে গড়ে তুলেছেন নতুন নতুন ইমারত। স্থানীয় লোকজন জানান, এই দুই ভাইয়ের মূল পেশা জুয়া। আর নেশা হলো বাড়ি কেনা।
জুয়ার টাকায় এনামুল ও রূপন কেবল বাড়ি ও ফ্ল্যাটই কেনেননি, ক্ষমতাসীন দলের পদও কেনেন বলে জানা যায়।
২০১৮ সালে এনামুল পান গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ। আর রূপন পান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ। তাঁদের পরিবারের পাঁচ সদস্য, ঘনিষ্ঠজনসহ মোট ১৭ জন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে পদ পান। তাঁরা সরকারি দলের এসব পদ-পদবি জুয়া ও ক্যাসিনো কারবার নির্বিঘ্নে চালানোর ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন বলে স্থানীয় লোকজন জানান।
ঢাকা ব্যুরো চীফ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur