বিয়ের আসরে বর পক্ষ আর আমন্ত্রিত অন্য অতিথিদের আপ্যায়ন শেষ হলো মাত্র। এবার বিয়ে পড়ানোর প্রস্তুতি। কিন্তু না, বিয়ে পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকতা গড়ালো না। কারণ অনুষ্ঠান চলা অবস্থায় উপস্থিত হয়ে গেলো একদল পুলিশ।
কাজীর হাত থেকে কাবিননামার বইটি জব্দ করা হলো। আর এভাবেই বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেল সদ্য নবম শ্রেণিতে উঠা ১৪ বছরের শিশু সালমা আক্তার নাহিদা।
১৭ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুপুর গ্রামে এমন বিয়ের আয়োজন চলছিল। ১৪ বছরের শিশু নাহিদার সঙ্গে তার দ্বিগুণ বয়সের যুবক আব্দুল কাদেরের এই বিয়ের প্রস্তুতি ছিল।
চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী গোপন সূত্রে জানতে পারেন, বিষ্ণুপুর গ্রামে বাল্যবিয়ের আয়োজন হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রাশেদ জামানসহ একদল পুলিশ সেখানে পাঠানো হয়।
তারা যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হন, নবম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে এই বিয়ের আয়োজন হচ্ছে। এ সময় কনের মা আশু বেগম এবং বরের বড়ভাই আব্দুর রহিমের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার আদায় করা হয়।
এতে শর্ত দেওয়া হয়, প্রাপ্ত বয়স না হওয়ার পর্যন্ত সালমা আক্তার নাহিদাকে বিয়ে দেওয়া যাবে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী আরো জানান, মজার বিষয় হচ্ছে, এই বিয়ে জায়েজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সালমা আক্তার নাহিদার জন্ম তারিখের সনদ দিয়েছেন। তাতে ২০০০ সালে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ মধ্যবিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি অনুযায়ী নাহিদার প্রকৃত জন্ম তারিখ হচ্ছে, ২০০৫ সালের ৯ মে।
স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশের নেতা শফিক ঢালী জানান, পুলিশের হস্তক্ষেপে এই বাল্যবিয়ে বন্ধ না হলে- একটি মেয়ের জীবন অল্প বয়সেই নষ্ট হয়ে যেত।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ১৮ জানুয়ারি ২০২০