চাঁদপুর শহরে দুই শিক্ষাপ্রতষ্ঠানের দ্বন্দ্বে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিন শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী এবার বছরের প্রথম দিন সরকারের বিনামূল্যের বই প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। খবর যুগান্তর।
দ্বন্দ্বের জেরে নবারুণ আদর্শ শিশু নিকেতনের ভর্তির ব্যানার নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলা, কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়াসহ প্রতিষ্ঠানটি উচ্ছেদের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে গণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলছে, আমরা তাদের উচ্ছেদ করছি না, বরং আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের অন্য স্থানে চলে যাওয়ার জন্য কয়েক বছর আগেই চিঠি দিয়েছি।
তারা অভিযোগ করেন, আমাদের বিদ্যালয়ের জায়গা ব্যবহার করে তারা স্কুল চালাচ্ছেন, অথচ আমাদের বিরুদ্ধেই তারা আদালতে মামলা করেছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে নবারুণ শিশু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক সরকার বলেন, গণি স্কুলের বহু রুম অরক্ষিত থাকায় একসময় মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয় তখন নবারুণ আদর্শ শিশু নিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই বছর গণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সহ-সভাপতি মৃত আবুল কাশেম চৌধুরীর কাছে শিশু নিকেতনের ক্লাস পরিচালনার জন্য লিখিত অনুমোদন চাইলে তিনি অনুমতি দেন।
তিনি বলেন, ওই সময় থেকেই ৩৪ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়ের ব্যানার টেনে ছিঁড়ে ফেলেছে এবং ক্লাস পরিচালনা যেন না করি এজন্য কমিটির সদস্য আমিনুর রহমান বাবুল শিক্ষিকাদের কঠোরভাবে বলে গেছেন। একপর্যায়ে নবারুণ কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। তারা আমাদেরকে নোটিশ দিয়েছিল এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য, আমরা সেই নোটিশের জবাব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে দেওয়ানি স্বত্ব মামলা রয়েছে। যা শুনানি হবে চলতি মাসের ২২ তারিখ। নবারুণ আদর্শ শিশু নিকেতনের অধ্যক্ষ ইতু চক্রবর্তী বলেন, হঠাৎ করে আমাদের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়ায় ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির শিশুরে মাঝে বই বিতরণ করতে পারিনি, তেমনি অন্যান্য কাজও করতে পারছি না।
এ রকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গণি মডেল হাইস্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাক হায়দার চৌধুরী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। নবারুণ শুরুতেই ক্লাস থ্রি পর্যন্ত ক্লাস চালাবে বলে তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এখন তারা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে কোনো ধরনের অনুমতি না নিয়েই। সকাল ৯টা পর্যন্ত তাদের ক্লাস করার কথা থাকলেও তারা ১০টা পর্যন্ত ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ এ সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের এসে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য আমিনুর রহমান বাবুল বলেন, নবারুণ কর্তৃপক্ষকে ২০১৬ সালে বলা হয়েছিল তাদেরকে চলে যাওয়ার জন্য। তারা চলতি বছরের নামমাত্র ভাড়াও দেয়নি।
ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যানার নামানো হলেই কি ছিঁড়ে ফেলা হয়? গণি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্বাস উদ্দিন জানান, তিনি নবারুণের কক্ষে তালা লাগানোর বিষয়ে কিছুই জানেন না।
বার্তা কক্ষ,৫ জানুয়ারি ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur