Wednesday, 10 June, 2015 12:51:54 AM
চাঁদপুর টাইমস, সিলেট:
সিলেটের সুবিদবাজারে দুর্বৃত্তরা অনন্তকে কুপিয়ে জখম করার পর কয়েক মিনিট তাঁর দেহ মাটিতে পড়েছিল। আর সেই অল্প কয়েক মিনিটে তোলা হয় আলোচিত হত্যাকাণ্ডের এই ছবি। ছবিতে দেখা যায় নিজ বাসার সামনে মাটিতে পড়ে আছে অনন্ত’র রক্তাক্ত দেহ। মাথা থেকে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। পাশেই বসে আহাজারি করছেন অনন্তর বোন। তারপরই তাকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। মূলত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই অনন্ত’র উপর হামলার খবর পান তার সহকর্মী ও সাংবাদিকরা।
পরের দিন ১৩ মে সিলেটের স্থানীয় দৈনিক সুবজ সিলেট-এ খুনের ঘটনার এই ছবিটি ছাপা হয়। ছবির ক্যাপশানে বলা হয় ফেসবুক থেকে সংগৃহীত ছবি।
তবে ফেসবুকে এই ছবির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি সিআইডির দাবি। সিআইডি’র দাবি, ফেসবুকের সূত্র দিয়ে ছাপা হওয়া ছবিটি তুলেছিলেন জাতীয় দৈনিক সংবাদ এবং স্থানীয় দৈনিক সবুজ সিলেট’র আলোকচিত্র সাংবাদিক ইদ্রিস আলী।
সোমবার ভোরের দিকে সিলেট শহরতালীর সাহেব বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সিআইডির বিশেষ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) মির্জা আব্দুল্লাহেল বাকি জানান।
অবশ্য পরিবারের দাবি, বাসা থেকে নয়, রোববার রাতে সিলেট শহর থেকে ইদ্রিসকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে তারা বাসায় সিআইডি সদস্যরা তল্লাশিও চালায়।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ঢাকা জোনের পরিদর্শক আরমান আলী সোমবার বিকালে ইদ্রিসকে সিলেটের মহানগর হাকিম আমলি আদালত-২ এ হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
এ সময় শুনানি শেষে এ আদালতের বিচারক ফারহানা ইয়াসমিন সাত দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন।
ইদ্রিসের স্ত্রী নিপা বলেন, রোববার অফিসে যাওয়ার পর তার স্বামী আর ফেরেননি। পরে রাত ২টার দিকে সিআইডি পুলিশ বাসায় এসে গ্রেপ্তারের কথা জানায় এবং বাসায় তল্লাশি চালায়।
“তারা বাসায় এসে ইদ্রিসের কম্পিউটারের খোঁজ করে। তা না পেয়ে ইদ্রিসের দুটো শার্ট নিয়ে চলে যায়।
মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করা ইদ্রিস আলী দৈনিক সংবাদে প্রায় দুই বছর ধরে ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করছেন। তার পাশাপাশি তিনি স্থানীয় দৈনিক সবুজ সিলেটে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেন।
ইদ্রিস স্থানীয় সাহেব বাজার সুন্নিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে মইয়ারচর তৈয়বিয়া তাহেরিয়া হেলিমিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন। পরে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন তিনি।
ইদ্রিসের মোটর সাইকেলটি সিলেট মহানগর পুলিশ কার্যালয়ের পাশে এক জায়গায় পাওয়া যায় বলে তার ছোট ভাই ইয়াহিয়া জানান।
সিআইডির বিশেষ সুপার আব্দুল্লাহেল বাকি বলেন, “সন্দেহভাজন হিসাবে ইদ্রিসকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের তথ্য পাওয়া যাবে আমাদের ধারণা। এ কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।”
গত ১২ মে সিলেটের সুবিদবাজার এলাকার বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে মুক্তমনার ব্লগার ও সিলেট গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক অনন্তকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ব্লগে লেখালেখির জন্য অনন্ত ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের হুমকি পাচ্ছিলেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
ঘটনার দিনই নিহতের বড়ভাই রত্নেশ্বর দাশ অজ্ঞাতনামা চার জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করেন।
বিমানবন্দর থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল আলম প্রথমে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেলেও হত্যাকারীদের কেউ গ্রেপ্তার বা শনাক্ত না হওয়ায় ১৪ দিনের মাথায় তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ডিএইচ/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur