দেখভালের ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাও বড় মসজিদের নামে ওয়াকফ করা পুকুরটি। দীর্ঘদিন ধরে মসজিদটির পরিচালনা কমিটি না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ পুকুরটির এই বেহাল দশা।
একসময় পুকুরটিতে অজু-গোসল করা ছাড়াও মাছ চাষ হতো। এখন পুকুরটি সম্পূর্ণ ময়লার স্তুপ পরিণত হয়েছে। বেদখল হয়ে যাচ্ছে পুকুরের তিনপাড়।
দখল হওয়া জলাশয় উদ্ধার করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে মাছ চাষ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। সম্প্রতি সরকারের এমন ঘোষণার পরও পুকুরটির এমন বেহাল দশার কারনে মুসুল্লিদের মাঝে দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ।
পুকুরটি রক্ষায় একটি উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হলেও কতিপয় অসাধু লোক বাধাঁ হয়ে দাড়িঁয়েছে। পুকুরের পাড় দখল করে বহুতল বাড়ি নিমার্ণ করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, কুমিল্লা বাগিচাগাও খা বাড়ির সামনে ৬ শতক জায়গার উপর ওই এলাকার মরহুম জিন্নাত আলী মসজিদটি নির্মাণ করেন। পরে তিনি মসজিদ সংলগ্ন পুকুরসহ আশে পাশের ৮৪ শতক জায়গা নিলাম হলে মরহুম হাজী জিন্নাত আলীর নাতী ফয়েজ উদ্দীন সরদার ওই ৮৪ শতক জায়গা ওসমান হায়দার চৌধুরীর মাধ্যমে নিলামের মাধ্যমে কিনে নেন। এরপর মসজিদের নামে তা ১৯৫৪ সালে ওয়াকফ করে দেন। ওই ওয়াকফ স্টেটের নামকরণ করা হয় নবাব শাহজাদা সৈয়দ ওসমান হায়দার এরস্টট। যার ইসি নং-১৪৩১১।
তবে মসজিদের নামে এই ওয়াকফ সম্পত্তিটি সঠিক পরিচালনা কমিটি না থাকায় কিছু অসাধু ব্যাক্তি অবৈধভাবে মসজিদের সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন সময় স্থানীয়দের মধ্যে শালিস বৈঠক হলেও তার কোন সুষ্ঠ সমাধান হয় নি।
মসজিদ পরিচালনার বিষয়ে চলতি বছর ৩ অক্টোবর দুদক ও জেলা প্রশাসনের তদন্তের পরে তদন্ত কর্মকর্তারা বেশ কিছু সুপারিশ করেন। সুপারিশগুলোর মধ্যে একটি ছিলো মসজিদ পরিচালনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা, গঠিত কমিটি কর্তৃক একটি ব্যাংক হিসাব খোলা এবং ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অধীন স্থানীয় ইসলামি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অডিট কমিটি করে আর্থিক বিষয়ে শৃঙ্খলা আনয়ন করা। তবে তদন্ত কমিটির আনীত সুপারিশগুলো একটিও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
মসজিদের সাধারণ মুসুল্লিরা জানান, ১৯৯৮ সালে এলাকাবাসীকে নিয়ে মসজিদ উন্নয়ন কমিটি করা হয়। এ কমিটির কার্যকালে মসজিদটির দোতলা নির্মাণসহ তিনতলার কাজ চলমান রয়েছে। মসজিদটির যে অবস্থা রয়েছে তা থেকে উত্তোরণের জন্য মসজিদের মুসুল্লিদের নিয়ে একটি কমিটি করলে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।
মসজিদের বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান জম্পি বলেন, অন্তত ২০/২৫ বছর ধরে সমস্যা চলছে। এখানে যারা ওয়াকফ স্টেটে বসবাস করছেন তারাই মসজিদ ও মসজিদ কমিটি নিয়ন্ত্রণ করছেন যা মোটেও কাম্য নয়।
মসজিদ পরিচালনার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক মো:আবুল ফজল মীর জানান, আমি শুনেছি মসজিদের বিষয়টা। এখন মসজিদের ব্যাংক হিসাবটি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা কর্মকর্তার নামে পরিচালিত হচ্ছে। শীঘ্রই কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে মসজিদ পরিচালনার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রতিবেদক:জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল