চাঁদপুরে বিয়ের দাবিতে পেট্রল নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া তরুণী এখন জেলহাজতে। উপযুক্ত অভিভাবক না আসায় সোমবার সন্ধ্যায় আদালতের নির্দেশে তার নিরাপত্তার স্বার্থে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে গত দুইদিন পুলিশ হেফাজতে ছিলেন সোনিয়া। তারও আগে গত শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রেমিক শেখ মাহবুব আলমের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিলেন ওই তরুণী।
চাঁদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম সকদী গ্রামের এমন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক হইচই পড়ে। এ সময় ওই তরণী প্রেমিককে না পেয়ে তার বাবাকে মারধর এবং বসতঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। শুধু তাই নয়, পেট্রল দিয়ে নিজে আত্মহুতিসহ বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন প্রেমিকা সোনিয়া আক্তার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছর খানেক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ঢাকার দোহারের মেয়ে সোনিয়া আক্তারের (২২) সঙ্গে চাঁদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম সকদী গ্রামের শেখ শহীদ উল্যাহর ছেলে প্রবাসী শেখ মাহবুব আলমের (৩০)।
গত কয়েক মাস আগে মাহবুব প্রবাস থেকে ফিরে সোনিয়াকে নিয়ে বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়ান। নিজেরা বিয়ে করবেন বলেও কথাবার্তা পাকা করেন। কিন্তু তার আগেই সোনিয়াকে না জানিয়ে বিদেশ পাড়ি জমান মাহবুব। এই নিয়ে গত ১৫ নভেম্বর প্রতারণা ও নারী নির্যাতন আইনে প্রেমিক মাহবুরের বিরুদ্ধে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন সোনিয়া।
এমন পরিস্থিতিতে গত শনিবার ভোরে দোহার থেকে চাঁদপুরে এসে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন সোনিয়া। এ সময় একবোতল পেট্রলও ছিল তার হাতে। একপর্যায়ে মাহবুবের বসতঘরে ঢুকে তার বাবা শেখ শহীদ উল্যাহকে মারধর এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন সোনিয়া। এমন পরিস্থিতিতে ওই দিন সন্ধ্যায় সংবাদ পেয়ে পুলিশ সোনিয়াকে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিয়ে আসেন।
এ সময় শেখ শহীদ উল্যাহও সেখানে হাজির হয়ে সোনিয়ার আচরণ তুলে ধরেন তিনি। এই ঘটনায় শেখ শহীদ উল্যাহও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমি আগে কখনো এই মেয়েকে দেখিনি। ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে কি না-তাও জানি না।
অন্যদিকে সোনিয়া আক্তার বলেন, আমাকে বিয়ে প্রলোভনে ফেলে সম্পর্ক তৈরি করেছেন মাহবুব। কিন্তু তার আগেই কিছুই না বলে বিদেশে চলে যান তিনি। তাই আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে মাহবুব। আমি এর বিচার চাই।
এসব ঘটনায় সোনিয়া আক্তারের মুখোমুখি হন, চাঁদপুর সদর সর্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। তিনি জানান, বিষয়টি একটু জটিল। তাছাড়া কথিত প্রেমিক শেখ মাহবুব আলম দেশের বাইরে। তবে তাদের দুজনকে সরাসরি মুখোমুখি করা গেলে দ্রুত একটা সমাধানে আসা যেতো।
অন্যদিকে সদর মডেল থানার ওসি মো. নাসিমউদ্দিন জানান, সোনিয়া আক্তারের অভিভাবককে চাঁদপুরে আসার জন্য সংবাদ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের কেউ না আসায় বাধ্য হয়ে সোনিয়াবেক আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় নিরাপদ অবস্থানের জন্য আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাটিয়ে দেওয়া হয়।
স্টাফ করেসপন্ডেট,৩ ডিসেম্বর ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur