চাঁদপুর জেলার মেঘনার দুর্গমচর ইশানবালার কৃষক জাহাঙ্গীর মাল তার পরিবার, বোন ও ভাগ্নে বৌকে নিয়ে মাজার জিয়ারত শেষে সিলেট থেকে ট্রেনযোগে বাড়ি ফিরছিলেন।
কিন্তু পথে দুর্ঘটনায় স্ত্রী আমাতুন নেছা, শিশু সন্তান মরিয়ম বেগম এবং ভাগ্নে বৌ কাকলী বেগম প্রাণ হারান। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, জাহাঙ্গীর মাল, বোন রহিমা বেগম এবং বোনের নাতনি শিশু ফাহিমা আক্তার।
আজ বুধবার সকালে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিমপাড় দুর্গমচর ঈশানবালার দক্ষিণ তিরাশিকান্দির গ্রামের বাড়িতে নিহত তিনজনকে দাফন করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতেই তাদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় সেখানে স্বজন আর প্রতিবেশিদের কান্নায় মেঘনাপাড় ভারী হয়ে উঠে।
নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য খলিলুর রহমান মাতব্বর জানান, গত শুক্রবার কৃষক জাহাঙ্গীর মাল হযরত শাহজালাল (রাহ.) মাজার জিয়ারত করতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিলেট যান। কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাতে ট্রেন দুর্ঘটনার স্ত্রী আমাতুন নেছা ((৩০), শিশু সন্তান মরিয়ম বেগম (৫) এবং ভাগ্নে বৌ কাকলী বেগম প্রাণ হারান।
খলিল মাতাব্বর আরো জানান, দুর্ঘটনার পর গোটা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তিনবছরের শিশু নাইমা আক্তার। দাদি রহিমা বেগম এবং নানাভাই জাহাঙ্গীর মাল একই হাসপাতালে ভর্তি হলেও এই দুই জনের জ্ঞান না থাকায় তখনো কেউ জানতো না নাইমা তাদের স্বজন। শেষ পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে রাজধানী ঢাকা থেকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান বাবা মাইন উদ্দিন।
নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন সর্দার জানান, মায়ের নিথর দেহ আর অসহায় বাবার কোলে গ্রামের ফিরে শিশু নাইমা। এ সময় একসঙ্গে তিনজনের মরদেহ দেখে এলাকায় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে শুধুমাত্র মাথায় আঘাত পাওয়া ছোট্ট শিশু নাইমা আক্তার অলৌকিকভাবে প্রাণে রক্ষা পাওয়ায় উপস্থিত স্বজনরা তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।
বার্তা কক্ষ, ১৩ নভেম্বর ২০১৯