ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ রেলস্টেশন এলাকায় দুটি আন্তনগর ট্রেনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট ও রেলওয়ে থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তারা হলেন- চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের আবদুল জলিলের ছেলে মজিবুর রহমান (৫৫), হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ ঈশানপুরের মঈন উদ্দিনের স্ত্রী কাকলী (২০), ঈশানপুরের জাহাঙ্গীরের মেয়ে মরিয়ম বেগম (৬), হাজিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমরাজারগাঁওয়ের মজিবুর রহমানের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৩০), উত্তর বালিয়ার বিল্লাল মিয়াজির মেয়ে ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের বাহুলার ইয়াছিন আরাফাত (১২), সৈয়দাবাদের আজমতউল্লাহের ছেলে মো. রিপন মিয়া (২৫), চুনারুঘাটের তীরগাঁওয়ের মৃত আবদুল হাশিমের ছেলে সুজন আহমেদ (২৪), বানিয়াচং উপজেলার মদনমূরকের আইয়ুব হোসেনের ছেলে আল আমীন (৩০), আনোয়ারপুরের আলী মো. ইউসুফ (৩২), চুনারুঘাটের আহমদাবাদের আবদুস সালামের স্ত্রী পিয়ারা বেগম, বানিয়াচং উপজেলার বড়বাজারের সোহেলের মেয়ে আদিবা (২), মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মুসলেম মিয়ার স্ত্রী জাহেদা খাতুন (৪৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোহেল রানার মেয়ে সোহামনি (৩), নোয়াখালীর মাইজদীর শংকর হরিজনের ছেলে রবী হরিজন (২৩)।
চাঁদপুর টাইমসের সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে চাঁদপুর জেলার মোট ৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদি গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ফারজানা ইসলাম, হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ ঈশানপুরের মঈন উদ্দিনের স্ত্রী কাকলী , হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও এলাকার মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী কুলচুমা বেগম।
এ দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রেলওয়ে সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল করিম, জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে: কর্ণেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
পরিদর্শন শেষে রেলওয়ে সচিব জানান, রেলওয়ে পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকাল নয়টা নাগাত বগিগুলো উদ্ধার শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
রেল দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়। এদের পুরুষ ৪ জন এবং ৫ জন নারী। কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, কয়েকজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়, কুমিল্লায় তিনজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কুমিল্লায় চিকিৎসাধীন আছে কাউছার (২৮) পিতা আবদুল জলিল বাড়ি সিলেট হবিগঞ্জ। জাহাঙ্গীর (৪০)পিতা আবুল হাসেম মাল বাড়ি হাইমচর চাঁদপুর, সোবহান (৪০) পিতা বারিক বাড়ি শ্রীমঙ্গল।
এদিকে হাসপাতালে আনার পথে এক শিশু মারা যায়। এর আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ১৩ জনকে ভর্তি করা হয়।
অন্যদিকে দূর্গত উদয়ন এক্সপ্রেসে আহত এক শিশুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হসপিটাল চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে এখনো ওই মেয়ে শিশুটির
মা বাবা বা কোনো অভিভাবকের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ইউএনও মাসুদ উল আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে ৯টি লাশ রয়েছে, এরমধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও চার জন নারী।
এর আগে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ জন ভর্তি হন, তারমধ্যে দুজন মারা গেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে দুজন মারা গেছেন। কুমিল্লায় ৯ জন ভর্তি হন, তারমধ্যে একজন মারা গেছেন, তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। উদ্ধার কাজ চলছে। আমরা কন্ট্রোল রুমও খুলেছি। স্থানীয়রা আমাদের জানিয়েছেন, প্রায় ১০০ লোক আহত হতে পারেন।’
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ জানিয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে থাকা সিলেট রেলওয়ে থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইকবাল হোসেন জানান, উদয়ন ট্রেনটি তুর্না নীশিতা ট্রেনটিকে সাইড দিচ্ছিল। উদয়নের অর্ধেক বগি অন্য লাইনে ঢোকার পর বাকি বগিগুলোতে তুর্না নীশিতা ধাক্কা দিলে দুটি বগি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
প্রতিবেদক : কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ১২ নভেম্বর ২০১৯