১৯৭৭ সালের ৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন বিজ্ঞানী,শিক্ষাবিদ ও লেখক কুদরাত-এ-খুদা। ১৯০০ সালের ১ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মাড়গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা খোন্দকার আবদুল মুকিদ ও মা ফাসিহা খাতুন।
কুদরাত-এ-খুদা কলকাতা মাদ্রাসা থেকে ম্যাট্রিক,১৯২৪ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএসসি ডিগ্রি পান। রসায়নশাস্ত্রে উচ্চতর গবেষণার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি দেয়। তিনি গবেষণার জন্য ১৯২৯ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিএসসি ডিগ্রি পান। দেশে ফিরে প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নের প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত তিনি ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৪৬ সালে অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে আবার প্রেসিডেন্সি কলেজে যান। দেশভাগের পর ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের জনশিক্ষা পরিচালক ছিলেন।
১৯৫২ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে পাকিস্তান বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের প্রথম পরিচালক নিযুক্ত হন। ১৯৬৬ সালে পরিচালকের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর তাকে কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়।
স্বাধীনতার পর তিনি জাতীয় শিক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান হন এবং এই কমিশন থেকেই ‘কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট’ পেশ করেন। ১৯৭৫ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। জৈব রসায়ন ছিল তার গবেষণার বিষয়।
তিনি বনৌষধি, পাট, লবণ, কাঠ কয়লা, মৃত্তিকা ও খনিজ পদার্থের ওপর গবেষণা করেন। তিনি তার সহকর্মীসহ ১৮টি বৈজ্ঞানিক পেটেন্ট আবিষ্কার করেন। পাটকাঠি থেকে পারটেক্স উৎপাদন ছিল তার সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক অবদান।
এ ছাড়া আখের রস ও গুড় থেকে মল্ট ভিনেগার,পাট ও পাটকাঠি থেকে রেয়ন এবং পাটকাঠি থেকে কাগজ তৈরি তার গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট দেয়। এ ছাড়া একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা তিনি পেয়েছেন।
বার্তা কক্ষ , ৩ নভেম্বর ২০১৯