Home / চাঁদপুর / নওগাঁর মেয়ে ইউএনওর কানিজ ফাতেমার মা পেলেন রত্নগর্ভা সম্মাননা
kanij-fatema-naugha

নওগাঁর মেয়ে ইউএনওর কানিজ ফাতেমার মা পেলেন রত্নগর্ভা সম্মাননা

নওগা জেলার পন্তিতলা উপজেলার প্রত্তন্ত এলাকার একটি গ্রামের নাম নাজিরপুর, সেই গ্রামেরই একজন সুনামধন্য মুসলিম পরিবারের সন্তান মো. আব্দুল করিম। তারই স্ত্রী সেলিনা বেগম। গ্রামের একজন সাধারণ নারী হয়ে নিজ সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বীকৃতি হিসেবে দুই-দুইবার ‘রত্মাগর্ভাপুরস্কার লাভ করলেন তিনি।

গত ৭ সেপ্টম্বর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে সেলিনা বেগমকে এই রন্তাগর্ভা এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এরপূর্বে ২০১৫সালে মা দিবসে আজাদ প্রোডাক্টস‘রত্মাগর্ভা মা এ্যাওয়ার্ড পান তিনি।

গ্রামের একজন সাধারণ নারী হয়েও নিজ সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ এই ‘রত্মাগর্ভা সম্মাননা লাভ করেছেন তিনি।

সেলিনা বেগেমের ৫ সন্তান পাঁচজনই বিসিএস ক্যাডারে উন্নিত হয়ে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পদে চাকুরী করছেন সুনামের সাথে। তার সন্তানদের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা একজন।

কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা জানান, তারা ৩বোন ২ভাই, বড়বোন কামরুন্নাহার তিতুমির কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রফেসর, ভাই মো. জাহান তিনি রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ও জাপানের একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন, বোন কুলসুম নাহার ঢাকা ডেন্টাল কলেজের সার্জন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন, আর তিনি কানিজ ফাতেমা চাঁদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং ছোট ভাই কামরুজ্জামান বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পিডাব্লিউওডিতে কর্মরত রয়েছেন।

নওগাঁর এ পরিবারটি এখন শিক্ষাক্ষেত্রে হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য ও গৌরবের অংশীদার হয়ে দেশের সম্পদ হিসেবে স্বীকৃত।

কানিজ বলেন, আমার মা একজন মহিয়সী নারী। তিনিও ততকালিন সময়ে এইচএসসি পাস করেছেন। আমার বাবাও রাজশাহী সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। আমার মা আমাদেরকে যেমন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন তেমনি আমাদের এলাকায় প্রতিবেশীদেরকেও শিক্ষিত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। আমার মা মনে করেন শিক্ষাবিহীন মানুষ অন্ধ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফল হতে হলে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। তাই তিনি সব সময় শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন বলেই আজ আমরা ৫ ভাই-বোন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত।

তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর সম্পর্কের নামটি হচ্ছে মা। তাঁর দু’চাখ ভরা স্বপ্ন তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। সন্তানদের সুশিক্ষা দিয়েছেন। ‘রত্নগর্ভা’ এই সম্মাননাটি আমার মা’ পেয়েছেন তাঁর নিজের যোগ্যতায়। আমার মা’কে নিয়ে আমাদের ভাই-বোনরা সকলে গর্বিত। তিনি সফলভাবে আমাদের মানুষ করেছেন বলেই আজ সমৃদ্ধ ও অগ্রগতির বাংলাদেশের অগ্র যাত্রায় কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পারছি। মা-বাবার বিপুল ত্যাগ আর পরিশ্রমের বিনিময়ে সন্তানরা মানুষ হয়।

আর এদেরকেই বলে রত্মগর্ভা মা। মা হচ্ছেন শিল্পী, মানুষ গড়ার একজন কারিগর। আমরা জিতলে জিতে যান মা। জিতেছি, বড় হয়েছি, মানুষ হয়েছি। তাইতো আমার মায়ের আজ এই মর্যাদা পাওয়া। আমি এতটুকু বলতে পারি মায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে পৃথিবীর যে কোন দেশ থেকে বাংলা মায়ের সন্তানরা অনেক দুর এগিয়ে যাবে।

কানিজ ফাতেমার জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে পড়ুন- নওগাঁর ফাতেমা যেভাবে আজ চাঁদপুরের জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ইউএনও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯