কথায় আছে ‘রাখে আল্লাহ মারে কে’। চলন্ত লঞ্চ থেকে পা পিছলে প্রমত্তা মেঘনা নদীতে পড়ে গিয়েও প্রাণে বেঁচে গেলেন নাছরিন বেগম সেলিনা নামে এক নারী। মঙ্গলবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের সময় এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল বিকেল ৫টায় চাঁদপুর মাদ্রাসা রোডস্থ লঞ্চঘাট থেকে বোগদাদীয়া ৭ লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় যাত্রী নিয়ে। ছেড়ে যাওয়ার ১৫/২০ মিনিটের মাথায় হঠাৎ করেই লঞ্চের ডেকে থাকা নাছরিন বেগম সেলিনা (৩০) নামে এক নারী যাত্রী অসাবধানতাবশত পা পিছলে মেঘনা নদীতে পড়ে যান।
তখন ডেকে থাকা অন্য যাত্রীরা ডাক চিৎকার দিতে থাকে। তাদের ডাকচিৎকারে দুর্ঘটনার সংবাদ পান সারেং। ততোক্ষণে লঞ্চ অনেক দূর এগিয়ে যায়। সারেং তাৎক্ষণিক লঞ্চ ঘুরিয়ে যেতে থাকে নদীতে পড়ে যাওয়া যাত্রীর দিকে।
এক পর্যায়ে সকলের নজরে পড়ে বাঁচার জন্যে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে সাঁতার দিয়ে চলছেন ওই নারী। লঞ্চের স্টাফরা এ অবস্থায় লঞ্চে থাকা বয়া ছুড়ে মারেন তার দিকে। কিন্তু ততোক্ষণে বয়া ধরে উপরে উঠার মতো শক্তি হারিয়ে ফেলেন তিনি। তখন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লঞ্চের ২ জন স্টাফ।
তারা প্রাণপণ চেষ্টা করে বয়ার মাধ্যমে যাত্রী সেলিনাকে লঞ্চে তুলতে সক্ষম হন। এরই মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরলে তার পরিচয় জানা যায়।
লঞ্চের মাস্টার কলিম উল্লাহ জানান, ওই নারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের ইকবাল হোসেনের স্ত্রী। তিনি ২ কন্যা সন্তানের জননী। ঢাকায় নিকট আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার লক্ষ্যে একাই তিনি বাড়ি থেকে রওয়ানা হন। তবে তার নদীবক্ষে পড়ে যাওয়াটাকে অনেক যাত্রীই স্বাভাবিক চোখে দেখেননি।
তবে তিনি মহিলার সাথে কথা বলে জানান, তার নাম নাসরিন আক্তার সেলিনা, আনুমানিক বয়স প্রায় ৩৫ বছর। স্বামীর নাম ইবকাল হোসেন। চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে তার বাড়ি এবং পাইকপাড়া মাদ্রাসার পাশে তার স্বামীর চা’দোকান রয়েছে।
তবে লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি জানান আমরা মহিলাটিকে লঞ্চ থেকে পড়ে যেতে দেখিনি, যাত্রীদের কাছথেকে শুনা তথ্যমতে মহিলাটি লঞ্চের নিচতলার পিছন অংশ থেকে পড়ে গেছে বলে তিনি জানান।
কেউ কেউ এটিকে আত্মহত্যার চেষ্টা বলেও অভিহিত করেন।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯