চাঁদপুর সদরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতা উত্তোলন করতে ব্যাংক পরিবর্তন করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শুরু থেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাষ্ট্রয়াত্ব ব্যাংক জনতা ব্যাংক লিমিটেড থেকে তাদের বেতন ভাতা উত্তোলন করলেও সম্প্রতি সময়ে কিছু সংখ্যক তাদের কর্মকর্তাদের পরামর্শে রূপালী ব্যাংকে তাদের একাউন্ট স্থানান্তর করেন।
কিন্তু সেখানে গিয়েও কাংখিত সেবা না পেয়ে পুনঃরায় অনেকে আবারও জনতা ব্যাংকে ফিরে এসেছেন। এখন আবার শিক্ষকদেরকে বেসরকারি ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এ তাদের একাউন্ট স্থানান্তর করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চাঁদপুর জেলা সদর ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষক প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে আসেন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার অর্থাৎ এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করা তাদের জন্য অনেকটা বিড়ম্বনা ও জটিলতা সৃষ্টি হবে। এখন তারা চেকের মাধ্যমে টাকা তুলেন। নিজে না আসতে পারলে অনেক সময় অন্যের সাহায্য নিয়ে টাকা তুলেন।
জনতা ব্যাংক লিমিটেড নতুন বাজার শাখা সূত্রে জানাগেছে, চাঁদপুর জেলা সদরের নতুন বাজার ও সমবায় শাখা থেকে জেলা সদরের প্রায় এক হাজারের অধিক শিক্ষক বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। এর মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষক চাকুরীজীবী ঋন হিসেবে প্রায় ৩ কোটি টাকা নিয়েছেন। তাদের মাসিক বেতন থেকে এই ঋন পরিশোধ করেন। তাদের একাউন্ট স্থানান্তর করা হলে ঋন পরিশোধ নিয়েও জটিলতার সৃষ্টি হবে ব্যাংক এবং শিক্ষকদের মধ্যে।
সদরের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, তারা প্রতিমাসেই জনতা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন। টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে কোন সমস্যা হচ্ছে না। কোন উৎসব কিংবা বিশেষ সময়ে স্বাভাবিকভাবে ব্যাংকে ভীড় থাকে। সরকারি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতেই তাদের সুবিধা হয় এবং নিরাপত্তা রয়েছে। শিক্ষকরা জনতা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে ইচ্ছুক, অন্য ব্যাংকে যেতে কেউ আগ্রহী নই।
তবে কেউ কেউ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের চাপ প্রয়োগের কারণে অন্য ব্যাংকে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক।
এই বিষয়ে জনতা ব্যাংক নতুন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক ইলা রানী দত্ত চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন আসলে ১ দিনের মধ্যেই সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা কালেকশন করে পরদিন থেকে শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান করি। আমাদের ব্যাংক থেকে শিক্ষকদের বেতন স্থানান্তর করার বিষয়টি জেনে আমরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে আলাপ করেছি।
-তিনি বলেছেন, আমাদের শিক্ষকরা কেন ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবে। আমরা চাচ্ছি এটিএম কার্ড দিয়ে শিক্ষকরা বেতন তুলতে। কিন্তু বয়স্ক শিক্ষকরা এই পদ্ধতি কি খুব সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। এই ধরণের কার্ড ব্যবহার করা কি সম্ভব হবে। এটাই এখন বিবেচনার বিষয়।’
চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহাবুদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শিক্ষকদের সুবিধা হয় এমন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করবে। কারণ অনেক শিক্ষক বেতন উত্তোলন করার জন্য ওই দিনে ক্লাশে অনপুস্থিত থাকেন। সেই আলোকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে আমরা পরামর্শ দিয়েছি ডাচ বাংলা ব্যাংকে একাউন্ট স্থানান্তর করার জন্য। এখন শিক্ষকরা তাদের সুবিধামত যে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন, এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।’
বার্তা কক্ষ, ২৭ আগস্ট ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur