কণ্ঠশিল্পী সালমা আক্তারের দ্বিতীয় স্বামী সানাউল্লাহ নূরীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, শারীরিক নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার প্রথম স্ত্রী তাসনিয়া মুনিয়াত পুষ্মী।
শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
নিজেকে বেসরকারি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ছাত্রী পরিচয় দেওয়া পুষ্মী বলেন, ২০১৪ সালের ০৩ জুন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে সানাউল্লাহ নূরীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তার ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালান সানাউল্লাহ নূরী।
‘এমনকি আমার সঙ্গে প্রতারণাও করেছেন তিনি। বিষয়টি আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। উল্টো তারাও আমার প্রতি একই মানসিকতা দেখাতে থাকেন।’
স্বামী সানাউল্লাহ নূরীকে টাকা-পয়সা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে সানাউল্লাহ নূরী লন্ডনে যাওয়ার কথা বললে আমার মা চাকরির বেতনের বিপরীতে রূপালী ব্যাংকের কক্সবাজার শাখা থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন। এরপর সাড়ে ছয় লাখ টাকা আমার স্বামী নূরীর ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে এবং বাকি সাড়ে তিন লাখ টাকা তার বাবা-মাকে দেন।
‘কিন্তু ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তার যাওয়া বাতিল হয়ে যায়। পরে ওই টাকা দিয়ে তিনি ব্যবসা করতে চান এবং ব্যবসার জন্য আরও ১০ লাখ টাকার জন্য আমায় চাপ দিতে থাকেন। অথচ আমার বাবা-মার পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। আর তখন থেকেই তারা আমার ওপর নির্যাতন চালানো শুরু করেন।’
পুষ্মী বলেন, ‘নানা ঘটনার পরও সানাউল্লাহ নূরী ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ড যান। ওখানে যাবার পর কয়েকদিন যোগাযোগ করলেও হঠাৎ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেযন।
‘এক পর্যায়ে নির্যাতন ও মারধরের ঘটনায় ২০১৮ সালের ৫ জুলাই আমার মা বাদী হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন সানাউল্লাহ নূরীর বিরুদ্ধে। এরপর সানাউল্লাহ লন্ডন থেকে ফিরে ক্লোজআপ তারকা কণ্ঠশিল্পী সালমাকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিয়ে করেন। বর্তমানে ওই মামলায় সানাউল্লাহ কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দি।’
আদালতে মামলা ও নির্যাতন এবং প্রতারণার বিষয়টি মুখ খোলায় স্বামী পরিবারের লোকজন নানা হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এই তরুণী।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনে পুষ্মীর বাবা অধ্যাপক এম আকতার আলম, মা দিলারা খানম, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, আলী আশরাফ আকন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সঙ্গীতশিল্পী সালমা ২০১১ সালে রাজনীতিবিদ শিবলী সাদিককে বিয়ে করেন। তাদের কোলজুড়ে আসে এক কন্যাসন্তান। এর মাঝে ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর সালমা গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিয়ে করেন সানাউল্লাহ নূরীকে। গতবছর সালমার বিয়ের খবর প্রকাশ হলেই তার স্বামী সানাউল্লাহ নূরীর প্রথম বিয়ের কথা সামনে আসে। এরপর সালমা দাবি করেন, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামীর বিচ্ছেদ হয়েছে। তবে সংবাদ সম্মেলনে পুষ্মী বলেছেন, তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ হয়নি।
এর আগে বিষয়টি নিয়ে সালমা বলেন, ‘প্রথম স্ত্রীর সম্পর্কে সাগর সবকিছুই আমাকে বলেছে। এটা তার জীবনের একটা দুর্ঘটনা বলে আমাকে জানিয়েছে। সঙ্গে এও বলেছে, প্রায় এক বছর আগে তাদের ছাড়াছাড়িও হয়ে গেছে।
সাগরের বিরুদ্ধে তার প্রথম স্ত্রীর অভিযোগগুলো শুনলাম। এ বিষয়ে কী বলবো, আমার জানা নেই। সাগর বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছে। ও দেশে এসেই এ বিষয়ে কথা বলবে এবং ব্যবস্থা নেবে। কারণ সাগর নিজেও আইনের মানুষ। শুনেছি তার প্রথম স্ত্রীও আইন বিষয়েরই ছাত্রী। সুতরাং আইনিভাবেই এটা সমাধান হবে। তবে আমার জানা থেকে এতটুকু বলতে পারি আইনি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই সে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে এবং দ্বিতীয় বিয়ে অর্থাৎ অমাকে বিয়ে করেছে।’
বার্তা কক্ষ
১৩ জুলাই ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur