ইদানীং প্রায়ই শহর-বন্দর-গ্রামের বিভিন্ন জনপদে কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা ঘটনা বা কোনো কিছু প্রতিষ্ঠার সময়কালের সূত্র ধরে জয়ন্তী বা জুবিলীর কথা শোনা যায়। এ প্রেক্ষাপটে যদি গোড়াতে যাই, তাহলে দেখি এর প্রবর্তন হয়েছে প্রাচীনকাল থেকেই।
আর এর আদি সূতিকাগার হলো রোমান সভ্যতার তৎকালীন প্রবাহের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে সময়কালভিত্তিক সূত্রপাত বা জন্মোৎসব। প্রথমত জানা যাক, জুবিলী বা জয়ন্তী কি? আর কি-ই বা সংজ্ঞার আবর্তে এর বাস্তবভিত্তিক অর্থ। প্রকৃতপক্ষে জুবিলীর অর্থ হলো উৎসবমুখর পরিবেশে জন্মতিথি পালন।
আর এটাকে বাংলায় বলা হয় ‘জয়ন্তী’। এদিকে ইংরেজি Jubilee শব্দটি এসেছে ফ্রান্স শব্দ Jubile-এর অপভ্রংশ থেকে। অবশ্য এর আদি ল্যাটিন শব্দ হলো ‘Jubilaeus’ মূলত কোনো ঘটনা বা ব্যক্তির যথাক্রমে সূত্রপাত ও জন্মকে ঘিরে সুনির্দিষ্ট সময়কাল পূরণ হওয়ার উপলক্ষে করে সম্মান প্রদর্শনপূর্বক স্মৃতিচারণের আবর্তে আনন্দঘন অনুষ্ঠান।
যতদূর জানা যায়, প্রথমত এর সূত্রপাত হয় ইহুদিদের মধ্যে। তারা ৫০ বছরকাল পূরণ হলে উৎসব পালন করত এবং এটাকে ভিত্তি করে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান এবং ক্রীতদাসদের মুক্তিদান, দেনা মাফ প্রভৃতি পুণ্যকর্ম সম্পাদন করত। তৎপর দ্বিতীয় পর্যায়ে যেটা দেখা যায়, তা হলো, ২৫ বছরকাল পূরণের প্রাক্কালে রোমান ক্যাথলিকদের আনুষ্ঠানিক উৎসব বিশেষ। এটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও অনেক ক্ষেত্রে এর গণ্ডি অতিক্রমপূর্বক হতো বিভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠান।
যা হোক, সময় ও ঘটনার পরিক্রমায় এ দুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ‘ষাট বছর কাল পূরণ’ ভিত্তি করে আনুষ্ঠানিক উৎসব পালনের উদ্ভব হয়ে উঠে আসে আর একটি জয়ন্তী। এ ছাড়া এখানেও থেমে থাকেনি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ‘শত বছর কালকেও’ এর মধ্যে টেনে আনা হয়। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে সময়কাল নিয়ে তারতম্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। যা হোক, এসব জয়ন্তী শুধু পালন করাও হয় না, যুগপৎ এর নামকরণও করা হয়।
সাধারণত ২৫ বছর পূর্তিকে বলা হয় : রজত জয়ন্তী (Silver Jubilee)
৫০ বছর পূর্তিকে বলা হয় : সুবর্ণ জয়ন্তী / স্বর্ণ জয়ন্তী (Golden Jubilee), ৬০ বছর পূর্তিকে বলা হয় : হীরক জয়ন্তী (Diamond Jubilee), ৭৫ বছর পূর্তিকে বলা হয় : প্লাটিনাম জয়ন্তী (Platinum Jubilee), ১০০ বছর পূর্তিকে বলা হয় : শতবর্ষ (Centenary jubilee)
১৫০ বছর পূর্তিকে বলা হয় : সার্ধশত (Sesquicentennial), ২০০ বছর পূর্তিকে বলা হয় : দ্বিশতবর্ষ (Bicentenary/ bicentennial)
বার্তা কক্ষ