Home / জাতীয় / ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ক্ষতি ৫৩৬ কোটি টাকা
ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ক্ষতি ৫৩৬ কোটি টাকা

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ক্ষতি ৫৩৬ কোটি টাকা

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে সারা দেশের ঘরবাড়ি, বাঁধ, সড়ক ও কৃষিতে ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা প্রণয়নে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল।

তিনি জানান, ফণীর কারণে ৭৮ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকার ঘরবাড়ি, ২৫১ কোটি টাকার বাঁধ, মাছ ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, ৫ কোটি টাকার আম বাগান এবং কৃষিতে ৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের খরচ হিসাব করে ১৬১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার ক্ষতি ধরা হয়েছে বলে জানান ত্রাণ সচিব। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় ফণী ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানে। তবে শনিবার বাংলাদেশে ঢোকার সময় এর গতি ৮০ কিলোমিটারে নেমে আসে। ফলে দেশে ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ফণীর কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণসহ পুনর্বাসনের পরিকল্পনা তৈরি করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ফণীর আঘাতে বরগুনায় ২ জন এবং ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে পাঁচজন নিহত এবং ৬৩ জন আহত হয়েছেন। ২ হাজার ৩৬৩টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৮ হাজার ৬৭০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৩ হাজার ৬৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর্থিক পরিমাণ ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। বিভিন্ন জেলায় ২১ দশকি ৯৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফণীর কারণে ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া নেত্রকোনায় হাওরের যে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় তা মেরামত করেছে।

অন্যান্য এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সভায় ২৫১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করলে অর্থ বিভাগ তা অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। ঘূর্ণিদুর্গত মানুষের জন্য ১৪ হাজার ৫০ টন চাল, ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৪ হাজার বান্ডেল ঢেউটিন এবং গৃহ নির্মাণের জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মঞ্জুর করার কথা সভায় জানায় ত্রাণ মন্ত্রণালয়। প্রতিমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্মীপুরে ৩৫টি বিদ্যালয় ঘূর্ণিঝড়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

যাচাই-বাছাই করে সেগুলো সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাদের আওতাধীন ২৪১ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে সভায়। ঝড়ে যেসব টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরকে মেরামত করতে বলা হয়েছে।

এনামুর রহমান বলেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রস্তুত ছিল, তাদের হেলিকপ্টারে ত্রাণের খাবার প্রস্তুত করা ছিল, প্রয়োজন না হওয়ায় সেগুলো সরবরাহ করা হয়নি। তিন বাহিনীর প্রধান আগামী সপ্তাহে সভা করবেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় কীভাবে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ মওকুফ এবং পুনরায় ঋণ দেয়ার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে যেসব চাষী পরিশোধ করতে পারেননি তাদের বিরুদ্ধে যেন মামলা করা না হয়, সেজন্য অর্থ বিভাগকে বলা হয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও জোরদার করার বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।(যুগান্তর)

বার্তা কক্ষ
১০ মে ২০১৯