নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় একটি সংগঠনে জড়ো হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সংস্কারপন্থি নেতারা। দলটির বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন একটি রাজনৈতিক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
‘জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ স্লোগানে তাদের এই উদ্যোগ তাদের রাজনৈতিক দল গঠনের প্রাথমিক পদক্ষেপ। ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মঞ্জু একসময় চট্টগ্রাম কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরেরও সভাপতি ছিলেন। বহিষ্কৃত হওয়ার আগে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ছিলেন তিনি।
মঞ্জু দাবি করেছেন, তাদের রাজনৈতিক দল ধর্মীয় রাজনৈতিক দল হবে না। দেশের সব জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিয়ে গঠিত হবে তাদের দল। পূর্ণাঙ্গ দল গঠনে পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে মঞ্জু বলেন, “এসব কমিটি তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে।”
১৯ দফা কর্মর্সূচির এই উদ্যোগে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন মঞ্জু। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর চাপে পড়া জামায়াতের মধ্যে একটি অংশ দলে সংস্কারের দাবি তোলা শুরু করে।
এর আগে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এ উদ্যোগ ধর্মভিত্তিক নয়, এমনকি সুনির্দিষ্ট তত্ত্বের আদলে আদর্শভিত্তিকও নয়। সম্ভাব্য ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ হচ্ছে একদল আশাবাদী মানুষের উদ্যোগ ও তাদের ভাবনা।
তিনি আরও বলেন, জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ নামে উদ্যোগ শুরু হলেও রাজনৈতিক দলের নাম, লোগো-পরিচয় আরও পরে নির্ধারণ করা হবে। নতুন এ উদ্যোগের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করবেন তিনি।
এর আগে জামায়াতে সংস্কার এবং একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালনকারী ব্যারিস্টার রাজ্জাক। কয়েক বছর ধরে তিনি লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন।
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক জামায়াত বিলুপ্ত করে নতুন দল গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন দলের আমীর মকবুল আহমাদকে। তার পদত্যাগের দিনই জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত হন শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।
এর মধ্যে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুর রাজ্জাক গত বছর একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়ে জামায়াত ছেড়ে যাওয়ার পর তা আরও গতি পায়। রাজ্জাকের মতো একই মত প্রকাশ করে বহিষ্কৃত হওয়া মঞ্জু বলেছেন, তাদের এই উদ্যোগের সঙ্গে বিদেশে থাকা রাজ্জাকের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এই দল গঠনের উদ্যোগের পেছনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো মদদ নেই বলেও দাবি করেন তিনি। দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলামও এই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।
মঞ্জুর উদ্যোগের সঙ্গে শামিল হওয়ার কথা জানিয়ে অ্যাড. তাজুল দাবি করেন, তিনি আগে জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তবে পেশাগতভাবে তিনি জামায়াত নেতাদের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছিলেন।
বার্তা কক্ষ
২৭ এপ্রিল ২০১৯