‘আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে খাবার পানি সংকটে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রোগীরা। হাসপাতালের আঙ্গিনায় টিউবয়েল থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরে সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এমন দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা।
গত কয়েকদিন ধরে দেখা গেছে, জেলার এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর লোকজন খাবার পানি সংগ্রহ করার জন্যে হাসপাতালের পাশ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
স্থানীয় অনেক দোকানধাররা জানান,‘হাসপাতালে রোগীদের জন্য উন্নতমানের কোন খাবার পানিরর ব্যবস্থা না থাকায় অনেক লোকজন তাদের দোকানে গিয়ে পানি সংগ্রহ করেন। কেউ কেউ হাসপাতালের সামনে থাকা কালেক্টরেট জামে মসজিদের অযুখানা থেকে আয়রনযুক্ত পানি সংগ্রহ করেন। আবার অনেকে কোন উপায় না পেয়ে ডাকাতিয়া নদী কিংবা পৌর পাঠাগার থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করে আনেন।’
চাঁদপুর সরকারি এ হাসপাতালটি শুধু চাঁদপুর জেলাই নয়, পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর জেলার জনগণের চিকিৎসা সেবায়ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। তবে নামে এটি আড়াইশ’ শয্যার হলেও এটির অবকাঠামো এখনো ২শ’ শয্যার। কিন্তু রোগী গড়ে প্রতিদিন ভর্তি থাকে প্রায় তিনশ’। শয্যা ছাড়াও ফ্লোরে রোগী থাকে অনেক।হাসপাতালটির চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা এবং মান আগের চেয়ে অনেকটা উন্নত হওয়ায় দিন দিনই এখানে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
অথচ জেলার সর্ববৃহৎ এ হাসপাতালটিতে খাওয়ার উপযোগী কোনো পানি নেই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের বিকল্প ব্যবস্থায় খাবারের পানি সংগ্রহ করতে হয় অথবা দোকান থেকে ক্রয় করতে হয়।
হাসপাতালে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা খাওয়া তো দূরে থাক ব্যবহারেরও তেমন উপযোগী নয়। পানিতে প্রচুর পরিমাণ আয়রণ থাকায় এ পানি দিয়ে ধোয়া মোছা করলে কাপড় ও অন্যান্য জিনিস বিবর্ণ হয়ে যায় এবং গোসল করলে শরীর ও চুল আঠা আঠা হয়ে যায়। এমন অবস্থা দীর্ঘ দিন যাবৎ।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালটিতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানি সরবরাহ করা হয়। এখানে একটি রিজার্ভ ট্যাংকি রয়েছে এবং ডিপ বসানো হয়েছে। এই ডিপের পানিই হাসপাতাল এবং ডক্টরস্ কোয়ার্টারে সরবরাহ করা হয়। এ পানিতে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকায় এ পানি খাওয়া যায় না।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদেরকে বাসা বাড়ি থেকে অথবা দোকান থেকে ক্রয় করে পানি সংগ্রহ করতে হয়। খাবার পানি নিয়ে রোগীদের এমন দুর্ভোগ দীর্ঘ দিনের।
হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ শফিউল আলম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘এ হাসপাতালে যখন ডিপ বসানো হয় তখন কাজ সঠিকভাবে করা হয়নি। পানির পাইপ মাটির নিচে গভীরে কম যাওয়ায় আয়রন যুক্ত পানি আসে।’
তিনি জানান, ‘মাটির নিচে যতটুকু পাইপ বসানো হয়েছে তার মধ্যে কিছু অংশ জিআই পাইপ আছে। আর ওই জিআই পাইপ জং ধরে ছিদ্র হওয়ার কারনে টিউবয়েল চাপলে হাওয়া ধরে। এ কারনে ঠিকমতে পানি উঠেনা। তাছাড়া ওয়াসার ও নষ্ট। তাই ছিদ্র হওয়া জিআই পাইপ পাল্টিয়ে পিপিসি পাইপ বসিয়ে সেগুলো আমরা মেরামত করলে আর এ সমস্যা থাকবে না।’
প্রতিকেদক:কবির হোসেন মিজি
৫ মার্চ,২০১৯