চাঁদপুর হাজীগঞ্জে উপজেলার ভূমি কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে উপজেলার অধিকাংশ ছোট বড় খাল-বিল স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এক জনের দেখায় অন্য জন খাল ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠিান নির্মাণ করার কারণে খালগুলো দখলের পথে। দখলদারদের মধ্যে অনেকে নিজেকে ক্ষমতাসীন দলের দাবি করে আসছে বলে জানা যায়।
যদিও তাদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে যানা যায়, তারা প্রকৃত পক্ষে সুবিধাবাদী দলের লোক। তার কাজ হচ্ছে যে দলই যখন ক্ষমতায় আসে শুধুমাত্র তারা তাদেরকে সে দলের পরিচয় নিয়ে সুবিধা ভোগ করাই হচ্ছে তাদের প্রকৃত কাজ।
হাজীগঞ্জ উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাদের অধিকাংশরাই শুধু মাত্র জমি জমার খারিজ খতিয়ান নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। যদিও সিএস,আর এস,ম্যাপ এবং খতিয়ানে সরকারি খাল এবং হালট চিহ্নিত করা আছে। সরকারি খাল অথবা হালট রক্ষা করা ভূমি অফিসেরই কাজ। কিন্তু ভূমি অফিস থেকে এই পর্যন্ত কোথাও কোন খাল বা হালট চিহ্নত করে দেওয়ার কোন তথ্য আমাদের জানা নেই।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলার ভূমি অফিসের কানুনগোর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে চাঁদপুর টাইমসকে জানান,‘আমরা এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’
উপজেলার খালগুলোর মধ্যে বর্তমানে বন্ধের উপক্রম খালগুলোর অবস্থান হচ্ছে- কুঁচির বিল খাল, এটির অবস্থান হচ্ছে ৪নং কালোচোঁ ইউনিয়ন হয়ে সদর ইউনিয়ন এবং পৌরসভার বলাখাল স্টেশন রোডের পাশ দিয়ে বলাখাল পন্ডিত বাড়ি ঘেষে ডাকাতিয়া নদী।
কৈয়ারপুল খালের অবস্থান ২নং বাকিলা কিছু অংশ হয়ে বলাখাল এবং উচ্চগাঁর মাজ দিয়ে ডাকাতিয়া নদী। সর্দার খালের অবস্থান মুন্সীর হাটস্থ ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ নদী হয়ে বাসারা, উভারামপুর হয়ে সাদ্রা ও সমেশপুরের মধ্য দিয়ে ডাকাতিয়া নদী।
রামচন্দ্রপুর খালের অবস্থান ঝাঁকনী হতে গোবিন্দপুর রামচন্দ্রপুর হয়ে ব্রাহ্মণীছোঁয়া হয়ে প্রতাপপুরের মধ্য দিয়ে ডাকাতিয়া নদী। মিঠানিয়া খালের অবস্থান কালচোঁ ইউনিয়নের কালচোঁ গ্রাম হতে দোয়ালিয়া, সুদিয়া হয়ে দোয়ালিয়া খাটরা বিলওয়াই ও মধ্য দিয়ে মকিমাবাদের মধ্য দিয়ে ডাকাতিয়া নদী।
নাটেহরা খালের অবস্থান সেন্দ্রা হতে জাঁকনি গোপালখোঁড় হয়ে নাটেহরা ও মনিনাগের মধ্য দিয়ে ডাকাতিয়া নদী। সোনাপুর খালের অবস্থান ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঘনিয়া ডাকাতিয়া শাখা হতে মনতলা, সেন্দ্রা, সোনাইমুড়ি হয়ে রান্ধুনীমুড়ার মধ্য দিয়ে ডাকাতিয়া নদী।
কোদালিয়া খালের অবস্থান গন্ধর্বপুর হতে মৈশামুড়া, পালিশারা, আহম্মদপুর হয়ে বড়কুল দিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে। শৈলখালী খালের অবস্থান হাড়িয়াইন হতে শুরু করে হাটিলার অংশ নিয়ে কংগাইশ হয়ে ডাকাতিয়া নদীতে মিশেছে।
এ খালগুলো সিংহভাগই বর্তমানে দখলদারদের কবজায়। যদিও এক সময়ে এ খালগুলোতে জোয়ার-ভাটা বসত এবং হাজার হাজার নৌকা চলাচল করত। কিন্তু বর্তমানে আজ সেই খালগুলো অসহায় পয়ে পড়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে রামচন্দ্রপুর খাল বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে কয়েকটি পরিবার বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছে।কেননা খাল দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না।
এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, ভুক্তভোগী মহলের পক্ষ থেকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে খালের মধ্যে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর কোর্টে মামলা হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
অভিজ্ঞমহল দাবি করেন, অচিরেই এই বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে খালগুলোর নাব্যতা ফিরে এনে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে এলাকার জলাবদ্ধতা থেকে হাজার হাজার একর কৃষি জমি মুক্ত করা হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেট
১২ ফেব্রুয়ারি,২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur