নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন হয়ে নির্বাচনি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
১৫ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সই করা করা এক চিঠিতে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সরকারি, আধা সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত,আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি দপ্তর,সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে কমর্রত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষকদের প্রতি এ অনুরোধ করা হয়।
আগামি ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণত ভোট গ্রহণ করা হয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজে। আর নির্বাচনি দায়িত্ব, বিশেষ করে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে শিক্ষকদের বড় একটি অংশ। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়েছে তারা যেন নির্বাচনি দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা করেন। এ ছাড়া নির্বাচনের ১০ দিন পর পর্যন্ত শিক্ষকদের দেশের বাইরের সব ধরনের ছুটিও বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা যায়, যারা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা তাদের সাধারণত প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের দেয়া হয় সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব। সরকারি কলেজের সব শিক্ষক এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। আর বাকি শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির পদ মর্যাদা সম্পন্ন। দেশে সরকারি কলেজে শিক্ষক সংখ্যা ১৫ হাজার, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা ১০ হাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংখ্যা পৌনে ৪ লাখ। সব মিলিয়ে সাড়ে ৮ লাখ শিক্ষক যাঁরা নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করার যোগ্য।
তবে আগামি নির্বাচনে কতসংখ্যক শিক্ষক দায়িত্ব পালন করবেন সে ব্যাপারে কেন্দ্রিয় কোনো তথ্য শিক্ষা অধিদপ্তর গুলোর হাতে নেই। কারণ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নির্বাচনি অফিস ও প্রশাসন নির্বাচনি কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করে থাকে।
২৫ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পত্রের বরাত দিয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ১৬ টি দপ্তরের প্রধানকে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সরকারি ও সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা নির্বাচনের কাজে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। ভোটগ্রহণের কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নির্বাচনে ব্যবহৃত হবে।
তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব অনুবিভাগ প্রধান, অধিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থা এবং তাদের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমর্রত শিক্ষক-কর্মচারীদের এ সংক্রান্ত আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন থেকে নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করতে অনুরোধ করা হলো।
২৭ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক নির্দেশনায় জানানো হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী কোনো প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহৃত হতে পারবেন না। মাউশি অধিদপ্তর থেকে এখন দেশের বাইরে কোনো ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে না। দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ,বেড়ানো বা অন্য কোনো কাজে কোনো শিক্ষক বিদেশে যেতে চাইলে তা’ফেরত দেয়া হচ্ছে।
মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা বলেন,‘ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনা এলে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি। এরই মধ্যে আচরণ বিধিমালাসংক্রান্ত নির্দেশনা ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। আগামি দিনে আরো এলে সেগুলোও দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘ নির্বাচনের কারণে এখন শিক্ষকদের সব ধরনের ছুটিও মঞ্জুর করা হচ্ছে না। তবে অসুস্থতাজনিত ছুটির আবেদনগুলো মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হচ্ছে। ছুটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এখন নির্বাচন কমিশনের হাতে।’
চাঁদপুর টাইমস রিপোটর্,
২০ ডিসেম্বর , ২০১৮ বৃহস্পতিবার