বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই হার অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ কোটি মানুষ টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন এবং তাদের ইনসুলিন প্রয়োজন হবে। মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
বুধবার প্রকাশিত ওই জার্নালে বলা হয়, এত বিশাল সংখ্যক মানুষের মাত্র অর্ধেকই হয়তো ব্যয়ভার বহনে সক্ষমত হবেন। গবেষকরা বলেন, ওষুধের সরবরাহ আরও বাড়াতে হবে। বিশেষ করে আফ্রিকান, এশীয় ও অশেনিয়া অঞ্চলে যেখানে এই রোগের হার সবচেয়ে বেশি থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. সঞ্জয় বসু এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, গবেষণা থেকে আমরা দেখতে পাই যে আমরা ডায়বেটিস মোকাবিলায় ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছি। আফ্রিকা ও এশিয়ায় এটি সবচেয়ে বেশি। এই স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
সঞ্জয় বসু বলেন, জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা পিছিয়ে আছি। বিশ্বের অনেক স্থানেই পর্যাপ্ত ইনসুলিন নেই। আর এটা সংগ্রহ করাও তাদের জন্য অনেক কঠিন।
ইনসুলিন ও ডায়াবেটিসের সম্পর্ক অনেকটা তাপ ও তাপমাত্রার সম্পর্কের মতো। ইনসুলিন হল একটি হরমোন, যেটি মানবদেহের অগ্ন্যাশয়ের আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহান্টসের বিটা কোষ থেকে নিঃসৃত হয়। আমরা যে খাদ্যই খাই না কেন, তার বেশির ভাগ অংশই শর্করায় পরিণত হয় এবং ইনসুলিন হরমোন এই শর্করাকে সারা শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস- এক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ হয় না এবং সারাজীবন ইনসুলিন নিতে হয়। টাইপ টু ডায়াবেটিস-এক্ষেত্রে ইনসুলিন নিঃসরণ কম হয় বা ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
বসু নেতৃত্বাধীন গবেষকের দলটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে যে আগামী ১২ বছরে ডায়বেটিসের হার কেমন হবে। আন্তর্জাতিক ডায়বেটিস ফেডারেশনের তথ্য ও আরও ১৪টি গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তারা দেখতে পায় যে ২২১টি দেশে টাইপ-২ ডায়বেটিস বাড়ছে। বর্তমানে এর সংখ্যা ৪০ কোটি ৬০ লাখ। আর ২০৩০ সালে তা হবে ৫১ কোটি ১১ লাখ। যুক্তরাষ্ট্রে থাকবে প্রায় ৩ কোটি ২৯ লাখ ডায়বেটিস রোগী যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।সঞ্জয় বসু বলেন, আগামী ১২ বছরে মূলত বয়স, নগরায়ন সংশ্লিষ্ট কারণগুলোতে টাইপ-২ ডায়বেটিস বৃদ্ধি পাবে।
তবে সবার ইনসুলিন প্রয়োজন হবে না। ৫১ কোটির মধ্যে ইনসুলিন প্রয়োজন হবে ৭ কোটি ৯০ লাখ মানুষের। গবেষণায় বলা হয়, ইনসুলিনের মাধ্যমে চিকিৎসা ব্যয়বহুল ও বর্তমানে মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করে। সঞ্জয় বসু বলেন,‘সরকার যতদিন পর্যন্ত এটি জনসাধারণের নাগালে আনার চেষ্টা করবে ততদিন এটি সবার জন্য দুঃসাধ্যই থেকে যাবে।
বার্তাকক্ষ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur