আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বিগত দিনে নিজের ও পরিবারের ত্যাগ এবং বর্ণাঢ্য রাজনীতির কারণে চাঁদপুর জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়া চাঁদপুর সদর-হাইমচর (চাঁদপুর-৩) সংসদীয় আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন।
আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে ত্াঁর যৌক্তিক দাবি এরইমধ্যে আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। তিনি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ধানমন্ডিস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রার্থীতার ফরম জমা দিয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নতুন সমীকরণে দেশের বেশ ক’টি আসনে আ’লীগের প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ থাকছে। তারই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুর-৩ আসনে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়া নতুন মুখ হিসেবে এসেছেন। কেন্দ্রীয় আ’লীগের শীর্ষ পর্যায়ের সবুজ সংকেতেই অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়া দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন হিসেবে চাঁদপুর-৩ বহুল আলোচিত। এরইমধ্যে গত দশ বছরে আ’লীগ সরকার দৃশ্যমান ব্যাপক উন্নয়ন করায় স্থানীয় ভোটারদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ আ’লীগ অত্যন্ত আস্থার স্থান করে নিয়েছে। ফলে দশ বছরের নতুন ভোটাররা এ আসনে সংদীয় প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি জানিয়ে আসছে।
এদিকে একজন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়া দলের সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছেও আস্থাভাজন। ফলে তিনিও দলের নেত্রীর কাছে আস্থা রাখতে পারছেন একজন দলীয় কর্মী হিসেবে। আর এমন সমীকরণে এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের টিকেটে প্রার্থী হিসেবে অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়া প্রতিদ্বন্ধিতা করলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না বলে দলটির অভ্যন্তরে আলোচনা হচ্ছে। যেমনটি হয়েছে ২০১৬ সালে জেলা আ’লীগের কাউন্সিলে দলটির জেলা সভাপতি হিসেবে মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মেদ সভাপতি নির্বাচিত হয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছিলেন।
অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়া প্রথমতো মুক্তিযোদ্ধা পারিবারের সন্তান। জেলা আ’লীগের রাজনীতির সাথে তার পুরো পরিবারই সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব থেকেই। এ পরিবারটি পুরো জেলায় আ’লীগ পরিবার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়।
চাঁদপুর শহর লাগোয়া ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের মধ্য ইচলির মৃত.নুরুল হক ভূঁইয়ার ছেলে অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়া সক্রীয় ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে ১৯৮৭ সালে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হয়ে আলোচনায় চলে আসনে। মেধাবী ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে ১৯৮৮-’৮৯ সালে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদ নির্বাচিত হন। ১৯৮৯-‘৯১ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দেন। এ সময়ে তিনি চাঁদপুর জেলায় স্বৈরাচর এরশাদ বিরোধী সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের শীর্ষ নেতা ছিলেন।
অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়া ১৯৯১-১৯৯৬ পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ছাত্রলীগকে জেলার শীর্ষ ছাত্রসংগঠনে রূপ দিতে সক্ষম হন। ২০০৫ সালে জেলা আ’লীগের কাউন্সিলে তিনি জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ফের ২০১৬ সালের কাউন্সিলে দলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হলে দলটির সভানেত্রী পুনরায় তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদেই বহাল রাখেন। এছাড়া তাকে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক রোষানলের শিকার হয়ে ফের জেলে যেতে হয়েছে।
একজন স্বনামধন্য আইনজীবী হিসেবেও তিনি তার খ্যাতি অব্যাহত রাখছেন চাঁদপুর জেলা আইনজীবী বারে। ২০১৭ সালে চাঁদপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও তিনি দক্ষতার সাক্ষর রাখেন। বর্তমানে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অ্যাড.মজিবুর রহমান ভূঁইয়ার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সফিকুর রহমান ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচিত ডেপুটি কমান্ডার। মেজ ভাই রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ছিলেন জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক এবং জেলা আ’লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক। আরেক ভাই মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি একং বর্তমানে আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
অত্যান্ত সদালপী ও মিষ্টিভাষী অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়া সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডেও রয়েছেন সক্রীয়। ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও আ’লীগের একজন কর্মী হিসেবে সমাজসেবার আরো বেশি অবদান রাখতেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনুরোধে তিনি এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর সদর-হাইমচর আসনে আ’লীগ তথা ১৪ দলীয় জোটের একক প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে এসেছেন।
অ্যাড. মজিবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, ‘আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আমি এবং আমার পরিবারের দীর্ঘ ত্যাগ ও শ্রম রয়েছে। আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে আমরা আওয়ামীলীগের রাজনীতির কান্ডারির দায়িত্ব পালন করেছি।
উড়ে এসে জুড়ে বসা কিংবা সুসময়ের সুবিধাবাদীদের মত আওয়ামীলীগের রাজনীতি কখনো করিনি। আমার চেতনায় এবং রক্তের সাথে মিশে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের আদর্শ। তাই আমি প্রত্যাশা করি, দলীয় সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন প্রদান করে আমাকে মূল্যায়ন করবেন। এছাড়াও তিনি দলীয় সভানেত্রীর যে কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল হয়ে কাজ করবেন। ’
করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ,২০১৮